দেশবাংলা
আ’লীগের বৈধ প্রার্থী ২৭৮, বিএনপির ৫৫৫
মনোনয়নপত্র বাতিল আওয়ামী লীগের ৩, বিএনপির ১৪১ ও স্বতন্ত্র ৩৮৪ * কোনো প্রার্থী নেই আওয়ামী লীগের ৩৯ আসনে ও বিএনপির ১০টিতে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তিনজন ও বিএনপির ১৪১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এতে আওয়ামী লীগের বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ২৭৮ জন এবং বিএনপির ৫৫৫ জন। যাচাই-বাছাইয়ে সবচেয়ে বেশি বাতিল হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র।
এতে ৩৮৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। নির্বাচনে ৪৯৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে বর্তমানে বৈধ প্রার্থী রয়েছেন ১১৪ জন। রোববার সারা দেশে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
মনোনয়নপত্র বাতিলের ফলে বিএনপির পাঁচটি আসনে কোনো প্রার্থী রইল না। এর আগে পাঁচটি আসনে দলটির কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। সব মিলিয়ে ১০টি আসনে বিএনপির প্রার্থী নেই। ২৮ নভেম্বর ২৯৫টি আসনে বিএনপির ৬৯৬ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন।
অপর দিকে আওয়ামী লীগের তিনজনের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় বর্তমানে ৩৯টি আসনে দলটির প্রার্থী নেই। এ নির্বাচনে ২৬৪ আসনে ২৮১ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রার্থী হয়েছিলেন। ৩৬টি আসনে দলটির কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠানো রিপোর্টে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়ে আওয়ামী লীগ ৩৬টি ও বিএনপি পাঁচটি আসনে কোনো প্রার্থী দেয়নি, সেগুলো দুই জোটের শরিকদের ছেড়ে দেয়া হয়। আরও জানা গেছে, ৯ ডিসেম্বর প্রত্যাহারের দিনই পরিষ্কার হবে জোটের শরিকদের কোন দল কতটা ছাড় দিল।
এ নির্বাচনে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী অন্য দলগুলোর মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির (ছাতা) ১২ জন বৈধ প্রার্থী রয়েছেন। মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ১৫ জন।
জাতীয় পার্টি-জেপির (বাইসাইকেল) বৈধ প্রার্থী রয়েছেন ১৩ জন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (চাকা) দু’জন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছা) ৩২ জন, কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি (কাস্তে) ৬৯ জন, গণতন্ত্রী পার্টি (কবুতর) আটজন, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (কুঁড়েঘর) ১১ জন, ওয়ার্কার্স পার্টি (হাতুড়ি) ৩২ জন, বিকল্পধারার (কুলা) ২৪ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
অন্য দলের মধ্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (মশাল) ৩৯ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি (তারা) ৪৪ জন, জাকের পার্টি (গোলাপফুল) ৭৩ জন, সমাজতান্ত্রিক দল (মই) ৪৩ জন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি (গরুর গাড়ি) ছয়জন, তরিকত ফেডারেশন (ফুলের মালা) ২০ জন, খেলাফত আন্দোলন (বটগাছ) ২২ জন, মুসলিম লীগ (হারিকেন) ৪০ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (আম) ৭৩ জন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (খেজুর গাছ) ১৪ জন, গণফোরাম (উদীয়মান সূর্য) ৪৪ জন, গণফ্রন্ট (মাছ) ১৪ জন, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল-পিডিপি (বাঘ) ১৪ জন, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ (গাভী) পাঁচজন, জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল) ১১ জন, ইসলামিক ফ্রন্ট (চেয়ার) ২৩ জন, কল্যাণ পার্টি (হাতঘড়ি) পাঁচজন, ইসলামী ঐক্যজোট (মিনার) ২৩ জন, খেলাফত মজলিস (রিকশা) নয়জন, ইসলামী আন্দোলন (হাতপাখা) ২৮১ জন, ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি) ২২ জন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (হুঁক্কা) চারজন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি (কোদাল) ২৭ জন, খেলাফত মজলিস (দেয়ালঘড়ি) ১৩ জন, মুসলিম লীগ-বিএমএল (হাতপাঞ্জা) ছয়জন, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (ছড়ি) তিনজন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফের (টেলিভিশন) ৫৬ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে।
বিএনপির ফাঁকা আসন বেড়ে ১০ : বাছাইয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় আরও পাঁচ আসনে বিএনপির কোনো প্রার্থী আপাতত নেই। এ আসনগুলো হল- সুনামগঞ্জ-৩, মানিকগঞ্জ-২, জামালপুর-৪, পাবনা-১ ও বগুড়া-৭। এর আগে মনোনয়নপত্র জমার নির্ধারিত দিনে বিএনপির প্রার্থী ছিল না টাঙ্গাইল-৮, মৌলভীবাজার-২, কুমিল্লা-৭, লক্ষ্মীপুর-৪ ও চট্টগ্রাম-১৪ আসনে।
আওয়ামী লীগের ফাঁকা আসন বেড়ে ৩৯ : তিনটি মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় কুড়িগ্রাম-৪, সাতক্ষীরা-১ ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন ফাঁকা হল। এর আগে ৩৬টি আসনে প্রার্থী দেয়নি দলটি। সবমিলিয়ে ৩৯টি আসনে দলটির প্রার্থী নেই। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময়ে যেসব আসনে প্রার্থী দেয়নি সেগুলো হচ্ছে- ঠাকুরগাঁও-৩, নীলফামারী-৩ ও ৪, লালমনিরহাট-৩, রংপুর-১ ও ৩, কুড়িগ্রাম-২, গাইবান্ধা-১, বগুড়া-২, ৩, ৪, ৬ ও ৭, রাজশাহী-২, কুষ্টিয়া-২, বরিশাল-৩ ও ৬, পিরোজপুর-২ ও ৩, ময়মনসিংহ-৪ ও ৮, কিশোরগঞ্জ-৩, মুন্সীগঞ্জ-১, ঢাকা-৪, ৬ ও ৮, নারায়ণগঞ্জ-৫, সুনামগঞ্জ-৪, সিলেট-২, মৌলভীবাজার-২, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, ফেনী-১ ও ৩, লক্ষ্মীপুর-২ এবং চট্টগ্রাম-২ ও ৫।