ভোলা
ইলিশা ফেরী ঘাটে ৩ ঘণ্টার পথ যেতে লাগে ৯ ঘণ্টায়
বিআইডব্লিউটিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বয়হীনতার কারণে দেড় মাসেও চালু হয়নি ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ইলিশা ফেরিঘাটটি।
আড়াই ঘণ্টার পথ বিকল্প উপায়ে ভেদুরিয়া ঘাট থেকে পাড়ি দিতে লাগছে ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা। অতিরিক্ত সময় ও দ্বিগুণ ভাড়া পরিশোধ করেও যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না বাস-ট্রাকগুলো। চরম ভোগান্তির কারণে কমে গেছে বাস ট্রাক পারাপার।
অবস্থার উন্নতির জন্য দ্রুত ইলিশাঘাটটি চালুর দাবি উঠলেও বিআইডব্লিউটিএ বলছে, ঘাট সচল হতে আরও ১৫ দিন সময় লাগবে।
মেঘনার ভাঙনের মুখে থাকা ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ইলিশা ফেরিঘাটটি সংস্কারের জন্য গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ২০ দিনের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করার ঘোষণা দিলেও গত দেড় মাসেও তা শেষ হয়নি।
কাজ চলাকালীন সময়ে প্রায় ৩৫ নটিক্যাল মাইল দূরের ভেদুরিয়া ঘাট থেকে বিকল্প উপায়ে ফেরি চলাচলের ব্যবস্থা করে কর্তৃপক্ষ। এতে ভাড়া ও দূরত্ব বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
আগের আড়াই ঘণ্টার নদীপথ পাড়ি দিতে এখন সময় লাগছে প্রায় ৯ ঘণ্টা। ফলে সময় ও ভাড়া বৃদ্ধির পাশাপাশি পাল্লাদিয়ে বেড়েছে ভোগান্তি। এতে আগ্রহ হারাচ্ছে ওই রুট ব্যবহারকারী পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। আর কাঁচা মালামাল নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
পরিবহন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমাদের সময় নষ্ট হচ্ছে, টাকাও নষ্ট হচ্ছে। ডাবলের চেয়েও ডাবল টাকা নষ্ট হচ্ছে।
আরেক তরমুজ ব্যবসায় বলেন, আমার গাড়িতে তরমুজ রয়েছে। পানি পড়তেছে। আমরা এবার এমনিতে মইরা গেছি। আমরা অনেক টাকা দেনা হয়ে গেছি।
যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের এ দুর্ভোগের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএকে দায়ী করে দ্রুত ঘাট চালুর দাবি এ উন্নয়নকর্মীর।
ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিস আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ রায় অপু বলেন, এখন তরমুজের সিজন। সামনে আবার ঈদের সিজন। মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএর দোষ রয়েছে।
তবে বৈরি আবহাওয়ার কারণে সংস্কার কাজ কিছুটা বিলম্ব হলেও শিগগিরই তা শেষ করার কথা জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বাবুল আক্তার বলেন, ঝড় ও বৃষ্টির জন্য কাজে সমস্যা হয়েছে। এখন আমাদের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী ছয় তারিখ থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঘাটের কাজ আরম্ভ করবে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নুরুজ্জামান খানের প্রতিনিধি ইঞ্জিনিয়ার ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, আমরা প্রতিদিনই কাজ করছি। দুই একদিন আবহাওয়ার কারণে দেরি হয়েছে।
বিকল্প রুটে দূরত্ব ও ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় ফেরির ট্রিপ ও গাড়ি পরিবহন কমে যাওয়ার কথা জানালেন বিআইডব্লিউটিসির এ কর্মকর্তা।
ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিসের ব্যবস্থাপক কে এম এমরান বলেন, আগে যেখানে ৬টি ট্রিপ হতে এখন সেখানে ৩টি হচ্ছে। আগে ২ থেকে আড়াই শ গাড়ি পার করতে পারতাম। এখন একশ থেকে ১২৫টি গাড়ি পার করতে পারছি।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ শেষে হলে পল্টুন ও ড্যাম বসানোসহ বাকি কাজ শেষ করতে আরাও ১৫ দিন লাগবে বলে জানান, বিআইডব্লিউটিএ এর এ কর্মকর্তা
ভোলা নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, পরিদর্শনপূর্বক পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে ঘাটটি চালু করা সম্ভব হবে।
ইলিশা ঘাট থেকে আগে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াইশ গাড়ি পারাপার হতো। বর্তমানে ট্রিপ সংখ্যা কমে যাওয়া ও দূরত্ব বেড়ে যাওয়ায় গাড়ি সংখ্যা কমে একশ’র নিচে নেমে এসেছে।