জাতীয়
জিসিসি ভোটে স্থগিতাদেশ: আপিলে যাবে ইসি
গাজীপুর সিটি করপোরেশন (জিসিসি) নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে আদালতের লিখিত আদেশের জন্য অপেক্ষা করা হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম।
সোমবার (৭ মে) নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জাবাবে এ কথা জানান তিনি। কমিশন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ব্যাপারে আপিল করবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, ‘আমরা এখনও অফিসিয়ালি আদালতের স্থগিতাদেশ পাইনি। লিখিত আদেশ পেলে কমিশন বৈঠকে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে- পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও রিটের সারমর্ম পাইনি। আশা করি দ্রুতই লিখিত আদেশ পাবো।’ গাজীপুর সিটি নিয়ে আবার তফসিল ঘোষণা করা হবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, ‘মাত্র ক’দিন সময় আছে এ সিটি নির্বাচনের। এর মধ্যে কোনও বিষয় সুরাহা না হলে তো আবার তফসিল দিতেই হবে।’
তিনি বলেন, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের স্থগিতাদেশ বিষয়ে আদালত নির্বাচন কমিশনকে কিছু জানায়নি। এ বিষয়টি আমরা আগে কিছু জানতাম না। গণমাধ্যম থেকে বিষয়টি জেনেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমের খবরে জানতে পেরেছি হাইকোর্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত করেছেন। আদালতের নির্দেশনার প্রতি সম্মান রেখে আমরা এ নির্বাচনের সকল কার্যক্রম বন্ধ রেখেছি।’ সংবিধানের ১২৫ (গ) অনুযায়ী ‘কোনও আদালত, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হইয়াছে এইরূপ কোনও নির্বাচনের বিষয়ে, নির্বাচন কমিশনকে যুক্তিসংগত নোটিশ ও শুনানির সুযোগ প্রদান না করিয়া, অন্তর্র্বতী বা অন্য কোনোরূপ আদেশ বা নির্দেশ প্রদান করিবেন না।’ সংবিধানের এ বিষয়টি কবিতা খানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা। প্রশ্ন করেন আদালত কি এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) আগে জানিয়েছেন কি না। কবিতা খানম বলেন, ‘আমরা এ রিট বিষয়ে হিয়ারিংয়ের আগে জানতাম না।
হিয়ারিং হওয়ার পর জেনেছি।’ আইনমন্ত্রী অথবা অ্যাটর্নি জেনারেলকে এ বিষয়টি ইসি জানাবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, ‘এ বিষয়টি কমিশন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। আমি এতটুকু বলতে পারি আদালতের সিদ্ধান্তকে আমরা অনার করেছি।’ গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনও আইনজীবী ওখানে নিয়োগ দেইনি। আমাদের আইজীবী প্যানেল আছে। সে প্যানেলভুক্ত একজন আইজীবী রিটের একটা কপি পেয়েছে। কপিটি পাওয়ার পরে উনি হিয়ারিংয়ে ছিলেন। কিন্তু আমরা তাকে অফিসিয়ালি নিয়োগপত্র দেইনি। তাকে ওকালতনামা দেয়ার মত সুযোগ ছিল না আমাদের।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কোনও সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আদালতের কাছে যেতে পারে। আইন তাকে সে সুযোগ দিয়েছে।
আমরা স্থানীয় সরকার থেকে ক্লিয়ারেন্স নেয়ার পরই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করি। আমরা গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ব্যাপারে স্থানীয় সরকার থেকে দুবার ক্লিয়ারেন্স নিয়েছি। তারা জানিয়েছে সেখানে কোনও ধরনের জটিলতা নেই। তারা আমাদের নির্বাচন করতে বলেছে।’ তবে অন্য সিটি নির্বাচন নিয়ে অ্যাডভান্স কিছু বলা যাবে না বলেও জানান কবিতা খানম। তিনি বলেন, ‘কী কারণে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে বিষয়গুলো ক্লিয়ার হওয়ার পর জনগণের মনে শঙ্কা থাকবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন রংপুর ও কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের মতোই সমাপ্ত করতে পারবো।’ প্রসঙ্গত আগামী ১৫ মে খুলনা সিটি নির্বাচন। মানুষ জানতে চায় সিটি নির্বাচন স্থগিত হচ্ছে এর দায় কার? নির্বাচন কমিশনের এখানে হাত আছে কি না? এ প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, ‘দায় কার এটা বলার সুযোগ আমার নেই। তবে আমি বলতে পারি কমিশনের কোনও গাফিলতি নেই।’