বরিশাল
পাপ ও পঙ্কিলতা মুছে ফেলতে দুর্গাসাগরে চলছে পূণ্যার্থীদের স্নানোৎসব
চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে দূর্গা সাগরে গোসল করে পাপ থেকে মুক্তি লাভের আশায় প্রতিবছরই বিভিন্নস্থান থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশার ঐতিহ্যবাহী দূর্গাসাগরে আসেন স্নান করে শুদ্ধ হতে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম পূণ্যস্থানে দূর্গাসাগরে আজ শুক্রবার (১২ই এপ্রিল) সকাল থেকে চলে এই স্নানোৎসব। এ উৎসবে হাজার হাজার পূণ্যার্থীর পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে মাধবপাশার দূর্গাসাগর পাড়। গঙ্গাদেবীর চরনে আত্মসমর্পন করে পূজা, অর্চনা ও প্রার্থনাসহ নানা আয়োজনের মধ্যেদিয়ে পাপ মুক্তির বাসনার স্নান সমাপ্ত করেন। এ উৎসব শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয়ে চলবে সন্ধ্যা অবধি।
দূর্গাসাগরে আসা প্রবীণ এক ব্যক্তিরা জানান, প্রায় দুইশত বছর ধরে চলে আসা জগতের যাবতীয় সংকীর্নতা ও পঙ্কিলতার আবর্তে ঘেরা জীবন থেকে পাপ মুক্তির বাসনায় হিন্দু পূণ্যার্থীরা দূর্গা সাগরে স্নান উৎসবে যোগ দিয়ে থাকেন।
এ উৎসবকে ঘিরে পুরো এলাকাজুড়ে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা বলয়। পাশাপাশি সাগর পাড়ের বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছে গ্রামীণ মেলার। যেখানে মুড়ি, মুড়কি, খেলনা, রাধাচক্কর থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও পাওয়া যাচ্ছে। সেখানেও ভীড় করেছেন ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা।
সূত্রমতে, ১৭৮০ খ্রিষ্টাব্দে চন্দ্রদ্বীপ পরগনার তৎকালীন রাজা শীবনারায়ণ এলাকাবাসীর পানির সংকট নিরসনে স্ত্রী দূর্গারানীর নামানুসারে দূর্গাসাগর দীঘি খনন করেন। যা পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালে দ্বিতীয়বারের মতো খনন করা হয়। ৪৫.৫৫ একর জমির মধ্যে দ্বীপসহ জলভাগের পরিমান ২৭.৩৮ একর এবং স্থলভাগের পরিমান ১৮.০৪ একর। দীঘির চারপাশে ও মেঝের দ্বীপটিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ, ঔষধী ও বনজ বৃক্ষ রয়েছে। এছাড়া দীঘির চারপাশ দিয়ে ১.৬ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে রয়েছে। তিনঘাট ও মধ্যখানে দ্বীপবিশিষ্ট এ দীঘির সর্বশেষ ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সংস্কার করা হয়।