রাজনীতি
পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস হারিয়েছে সরকার : রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, সরকার পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস হারিয়ে ফেলেছে। বৃহস্পতিবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা করেন।
রিজভী বলেন, “পুলিশ প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা রাতের ভোটে ব্যালট বাক্স ভরে দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে তারাও বেপরোয়া হয়ে গেছেন। সরকারকে পরোয়া করছে না। নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে তারা।”
বাসে, ট্রাকে, ট্রেনে, বাসা-বাড়িতে, কর্মক্ষেত্রে, কোথাও নারী-শিশু নিরাপদ নয় বলে জানান তিনি। বলেন, “তিন বছরের কন্যা শিশু থেকে শুরু করে ষাট বছরের বৃদ্ধা, প্রতিবন্ধী নারী, কেউই বাদ যাচ্ছে না। আর প্রতিটি ঘটনা ঘটাচ্ছে এই ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। নাৎসিবাদের এই অবিস্মরণীয় মূর্তি এ দেশে আর কখনোই দেখা যায়নি। এগুলো গণতন্ত্র হত্যার বিজয় অভিযানের বাই-প্রোডাক্ট।”
“ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা” উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “সেখানকার অন্ধকারের ভোটের এমপি থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ এবং পুলিশের সহযোগিতায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ওলামা লীগ নেতা সিরাজ-উদ-দৌলা অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছিল দিনের পর দিন। অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার নির্দেশে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনের জ্ঞাতসারে পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমের টাকায় ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাদত হোসেন শামীম ও ছাত্রলীগ নেতা নুরুদ্দিনের সক্রিয় অংশগ্রহণে সরকারি দলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকা প্রভাবশালীরা পরিকল্পিতভাবে প্রকাশ্যে পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটিয়েছে। এরা কতটা বেপরোয়া এবং শক্তিশালী যে, খুনির পক্ষে প্রকাশ্যে মিছিল করে হুমকি পর্যন্ত দেয়।”
রিজভী বলেন, “নুসরাতের পরিবারকে ডেকে প্রধানমন্ত্রী ধরিয়ে দিলেন একটি ব্যাংকের নিয়োগপত্র। জনমনে ধারণা, দলীয় নেতা–কর্মীদের বাঁচানোর সনদই হচ্ছে এই নিয়োগপত্র। যাতে করে পরিবারটিকে নিয়ন্ত্রণে রেখে মামলার গতি বদল করা যায়।”
আরও বলেন, “নয় দিন হলো নুসরাত মারা গেছেন। অথচ এই দুষ্কর্মের সহযোগিতাকারী সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করা ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থা দৃশ্যমান হয়নি। যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার পর নুসরাত জাহানকে ডেকে নিয়ে সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাকে লাঞ্ছিত করে, সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলেও তার কোন বিচার হচ্ছে না।”
সঙ্গে যোগ করেন, “যে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তাদের দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সরকার পুলিশ প্রশাসনের কাছে পুরোপুরি আত্মসমর্পণ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সৎ সাহস হারিয়ে ফেলেছে সরকার। কারণ মিডনাইট নির্বাচনে পুলিশ প্রশাসন সহযোগিতা করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়ে এখন রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে। এই সরকারের কর্মকাণ্ডে স্পষ্ট হচ্ছে এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তারা জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য দোষীদের সাজা দেওয়া হবে বলে অভিনয় করছে।”