বরিশাল
বরিশাল-৪ : আ.লীগে পঙ্কজ-শাম্মী, বিএনপিতে ফরহাদ আলোচনায়
দিন যত যাচ্ছে ততই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের টেনশন। প্রাথমিক অবস্থায় মনোনয়ন যুদ্ধে নেমে ঘাম ঝড়াচ্ছেন নেতারা। ইতিমধ্যে দলের নির্দেশনা না মেনেও অনেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। শুধু মনোনয়ন সংগ্রহ নয় যথারীতি এলাকায় গনসংযোগ করছেন তারা। বরিশাল জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে যে কয়টি আসন আলোচিত এবং ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগের জন্য ‘টার্নিং’ পয়েন্ট হয়ে প্রত্যেক নির্বাচনে দাড়ায় তার মধ্যে একটি হচ্ছে বরিশাল ৪ আসন। বিগত নির্বাচনের মত তাই আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়েও আলোচনা আর বিশ্লেষণের কমতি নেই এই আসনটি ঘিরে। হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ এই দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে ইতিমধ্যে জমে উঠেছে মনোনয়ন যুদ্ধ। এমনকি বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ গণসংযোগ করে অপরাপর প্রার্থীদের চেয়ে কেন তিনি যোগ্য তাও প্রচারণা চালাচ্ছেন নিয়মিত। তবে পঙ্কজ দেবনাথকে ঠেকাতে স্থানীয় আ.লীগের আরও কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা একট্টা হয়ে মাঠে নেমেছেন। সেসব নেতারা গণসংযোগ না করলেও কেন্দ্রে লবিং-তদ্বির চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, বরিশাল-৪ আসন থেকে আ.লীগের মনোনয়নপত্র কিনেছেন ৬ জন। যাদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহম্মেদ, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আফজালুল করিম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক লায়ন মজিবর রহমান হাওলাদার, মেজর (অব.) মহসিন সিকদার, বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারিক-বিন-ইসলাম।
পঙ্কজ দেবনাথের পাশাপাশি মনোনয়ন দৌঁড়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন সাবেক সাংসদ ও জাতীয় নেতা মরহুম মহিউদ্দিন আহমেদের কন্যা ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহম্মেদ। আর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক লায়ন মজিবর রহমান হাওলাদার ও বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আফজালুল করিমের নামও আলোচিত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ)-এর প্রার্থী আঞ্জুমান সালেহউদ্দিন থেকে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৭৮৪ ভোট বেশি পেয়ে জয়লাভ করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ।
ওদিকে বিএনপিতেও চলছে বাঘে মহিষে লড়াই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকার বিরোধী প্রচারণার চেয়ে নিজ দলের নেতাদের সমালোচনায় মুখোর রয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। সভা-সমাবেশ করতে না পারলেও গণমাধ্যমের সাথে স্পষ্টতই পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন নেতারা। এই আসনে বিএনপির ১১ জন প্রত্যাশী মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছেন, বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, সাবেক অর্থ প্রতিমন্ত্রী শাহ মোহাম্মদ আবুল হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাজীব আহসান, হিজলা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবদুল গাফফার তালুকদার, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম লাবু, হিজলা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি দেওয়ার শহিদুল ইসলাম, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল খালেক হাওলাদার, নুরুর রহমান জাহাঙ্গির, কবির উদ্দিন আনছারি। বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ারের ভাই মিজানুর রহমান অহিদ ও সাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার (অব:) শাখাওয়াত হোসেনর আত্মীয় সোহরাব হোসেন।
এদের মধ্যে বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাজীব আহসান আলোচনায় রয়েছেন। আলোচনায় থাকলেও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের পক্ষে স্থানীয় বিএনপি কাজ করায় ধারণা করা হচ্ছে ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসানকে পিছনে ফেলে মনোনয়ন পেতে পারেন মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ।
এই আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ নুরুল করিম ও গণফোরাম থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন সৈয়দ আব্দুল মান্নান।