জাতীয়
বর্ষবরণকে ঘিরে সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার
বাংলা নববর্ষ উদযাপনকে ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রাজধানীর বিনোদনকেন্দ্র রমনা পার্ক, ঢাবির টিএসসি, চারুকলা ও তার আশেপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে। উৎসবকে ঘিরে রমনাপার্কসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঢেকে দেয়া হয়েছে নিরাপত্তা চাদরে।
শুধু রাজধানীই নয়, এ উপলক্ষে সারাদেশে নিছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ওই দিন কাল ৫টার মধ্যে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে।
বর্ষবরণ উপলক্ষে র্যাব ফোর্সেস সদর দফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাসহ তাদের আধুনিক প্রযুক্তিসহ যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবে।
এরইমধ্যে রমনা বটমূল ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, চারুকলা ইন্সটিটিউট, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি ও শাহবাগ মোড় থেকে মৎস্য ভবন পর্যন্ত এবং ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত মেলার স্থানসমূহে র্যাবের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থার বাহিনীও বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এছাড়া রমনা বটমূল এলাকায় বেশ কয়েকটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার ও শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার মাধ্যমে কন্ট্রোলরুম থেকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ২৪ ঘন্টা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে।
ওইসব এলাকায় র্যাবের ইউনিফর্মধারী সদস্য, গোয়েন্দা সদস্য, বোর্ড ডিসপোজাল টিম, ডগ স্কোয়াড টিম, মেডিকেল টিমের মাধ্যমে র্যাব নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। রমনা বটমূল এবং রবীন্দ্র সরোবরতে সিসি টিভি মনিটরিংয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। নিরাপত্তায় জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য র্যাবের হেলিকপ্টার স্ট্যান্ডবাই থাকবে।
এছাড়াও বর্ষবরণে দেশব্যাপী বিভিন্ন সিনেমা হল, চিড়িয়াখানা এবং বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিতব্য বৈশাখী মেলায় সশস্ত্র ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত র্যাব সদস্যগণ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের সঙ্গে সমন্বয় করে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এছাড়া ডিএমপির পক্ষ থেকে বরাবরের মতো দর্শনার্থীদের অনুষ্ঠানস্থলে সন্দেহজনক কোন সরঞ্জাম, বস্তু, ব্যাগ, অস্ত্র, ছুরি, কাঁচি, পটকা, দাহ্য পদার্থ, ক্ষতিকারক তরল পদার্থ, নেলকাটার ,দিয়াশলাই ও গ্যাসলাইট সঙ্গে বহন না করার অনুরোধ করা হয়েছে।
অপরদিকে বর্ষবরণে নাশকতার আশঙ্কায় রমনাপার্কসহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী। বিনোদনস্পটগুলোতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। গত ১০ এপ্রিল থেকে গোটা ঢাকা শহরের হাসপাতাল ক্লিনিক, ডায়গনস্টিক সেন্টার, মেস, বস্তিসহ ঘনবসতি এলাকায় গোয়েন্দারা চষে বেড়াচ্ছে। গোয়েন্দারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় নেতাকর্মীদের খুঁজছেন। পাশাপাশি অনুষ্ঠানস্থলের নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়েছে। রমনা পার্কেও প্রতিটি প্রবেশ পথে আর্চওয়ে থাকবে। আশপাশের ১৩টি স্পটে থাকবে ব্যারিকেড ব্যবস্থা। পুলিশের সঙ্গে নিরাপত্তার কাজে মোতায়েন থাকবে সোয়াট, মহিলা পুলিশের দল। থাকবে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।
বর্ষবরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, এবার বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তায় কড়াকড়ি থাকবে। তবে থাকবে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়াবাড়ি। অন্যান্য বারের মতো এবারও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করবে। এবার নিরাপত্তায় অত্যাধুনিক ব্যবস্থা থাকছে। এই ইকুইপমেন্ট হচ্ছে ইমপ্রোভাইজড এক্সক্লোসিভ ডিসপোজাল ডিভাইজ। এটা দূর নিয়ন্ত্রিতভাবে কাজ করবে। পোশাকি পুলিশের সঙ্গে থাকবে সাদা পোশাকের ফোর্স। তাদেরকে খুঁজে বের করার জন্য ডিজিটাল ট্র্যাকিং সিস্টেম থাকবে। নিরাপত্তায় নেয়া হয়েছে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ও ওয়েলফেয়ারমূলক ব্যবস্থা। এবার আয়োজনের একটি অংশ হিসেবে থাকছে- বিনামূল্যে মেলায় আগতদের ফুল, বাতাসা ও পানির ব্যবস্থা।
ডিএম/জাগরণ/ডেস্ক