ভোলা
ভোলায় একই মঞ্চে মুখোমুখি চার প্রার্থী
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোলা-১ (সদর) আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী চার প্রার্থী অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভোটারদের।
শনিবার (২২ ডিসেম্বর) ভোলা শহরের বাংলাস্কুল মাঠের ভাসানী মঞ্চে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত জনতার মুখোমুখি অনুষ্ঠানে ওই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী মোট পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে চারজন জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের তোফায়েল আহমেদ, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের কেফায়েত উল্যাহ নজিব, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের মুফতি ইয়াছিন নবীপুরী ও কমিউনিষ্ট পার্টির কাস্তে প্রতিকের সোহেল আহমেদ। তবে বিএনপি প্রার্থী গোলাম নবী আলমগীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভোলার নির্বাচনী পরিবেশ খুবই ভাল, শান্তিপূর্ণ। আমি বিএনপি প্রার্থী গোলাম নবী আলমগীরের বাড়িতে গিয়েছি। শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি। এখানে কারো প্রচার প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে না। তবে তারা নিজেরাই মানুষের কাছে যাচ্ছে না।
তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, বিএনপি আমলে ভোলায় পানি সম্পদ মন্ত্রী ছিল কিন্তু ভোলার নদী ভাঙন প্রতিরোধে কোন কাজ করেনি । আমরা ভোলার নদী ভাঙন রোধে ব্লকবাধ দিয়েছি। নদী ভাঙন বন্ধ করেছি। ভোলায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ এই স্লোগান নিয়ে গ্রামগুলোতে শহরের সকল সুবিধা পৌঁছে দিয়েছি। সারা দেশের গ্রামগুলো শহরে রূপান্তর করা হবে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী কেফায়েত উল্যাহ নজিব বলেন, আমি কামনা করি স্বাধীনতার নেতৃত্ব এদেশে থাকুক। বিগত আমলে স্বাধীনতার স্বপক্ষ দলের পক্ষ থেকে উন্নয়ন যেভাবে হয়েছে তার ধারাবহিকতা বঝায় থাকে। এবং আমি নিজে যদি নির্বাচিত হই তাহলে একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে দ্বীপ জেলা ভোলার উন্নয়নের জন্য মেডিকেল কলেজ, ইউনিভার্সিটি স্থাপন ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলোর সমাধান করবো। এছাড়াও এ আসন থেকে যে নির্বাচিত হবে এলাকার উন্নয়নের জন্য তাকে সহযোগীতা করবো।
ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি ইয়াছিন নবীপুরী বলেন, আমাদের দেশে উন্নয়নের জন্য যে বরাদ্দ হয় তা দুর্নীতি আর বিভিন্ন রকমের অনিয়মের কারণে আমরা সেই বরাদ্দের যথাযথ বাস্তবায়ন হতে দেখি না। যদি আমাকে আপনারা ভোলা-১ আসনের এমপি হিসেবে মনোনীত করেন ইনশাআল্লাহ এলাকার উন্নয়নে যে কয় টাকা বরাদ্দ হবে এর মধ্যে কোনো রকম দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ করে এলাকার জনগণকে সাথে নিয়ে ভোলার উন্নয়নে কাজ করে যাবো। এসময় তিনি ভোলাকে মূল ভূখন্ডের যুক্ত করতে ভোলা-বরিশাল একটি আধুনিক ব্রিজ নির্মাণ করার অঙ্গিকার করেন।
কমিউনিষ্ট পার্টির প্রার্থী সোহেল আহমেদ বলেন, ভোলার প্রধান সমস্যা হলো নদী ভাঙন। এই নদী ভাঙন রোধে অনেক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। কিন্তু নানা অনিয়মের কারণে এ কাজ সঠিক মত সম্পন্ন হয়নি। আমি নির্বাচিত হতে পারলে কোনো প্রকার অনিয়ম না করে ভোলার নদী ভাঙন রোধ করা হবে। এবং ভোলা খালের দুই পারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পুনরায় খনন করে এর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রার্থীরা উপস্থিত ভোটারদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
সুজনের জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি মোবাশ্বের উল্যাহ চৌধুরীর সভাপতিত্ব করেন। প্রার্থীদের উদ্দেশে অঙ্গীকারনামা পাঠ করেন সুজনের আ লিক সমন্বয়কারী দিলিপ কুমার সরকার।
উপস্থিত প্রার্থীরা একসঙ্গে দাঁড়িয়ে হাতে হাত মিলিয়ে অঙ্গীকারনামা বাস্তবায়নের শপথ নেন। এ সময় করতালি দিয়ে উপস্থিত ভোটাররা তাঁদের অভিনন্দন জানান। উপস্থিত ভোটাররাও সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার শপথ নেন।