ক্যাম্পাস
লুঙ্গি আর শাড়িতে ববির শিক্ষার্থীদের নববর্ষ উদযাপন
কর্তৃপক্ষের কোন আয়োজন না থাকলেও যাকজমকপূর্ণভাবে পহেলা বৈশাখ পালন করছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলশোভাযাত্রা , বাঙ্গালী সংস্কৃতির গান-বাজনা ও নৃত্যু পরিবেশন, চিত্রাঙ্কন, হাড়ি ভাঙ্গা প্রতিযোগীতার পাশাপাশি মুড়িমুড়কি বাতাসার আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে বাংলা বর্ষকে বরণ করে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তবে ব্যতিক্রমি আয়োজন হিসেবে পূর্বে ঘোষনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা লুঙ্গির সাথে পাঞ্জাবি আর ছাত্রীরা বৈশাখি শাড়ি পরে বৈশাখ উৎসবে অংশগ্রহন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অর্থাৎ কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ বৈশাখী উৎসবের আয়োজন করেন।
তবে এবার তারা কোন পদক্ষেপ নেননি। অথচ গত ৭ এপ্রিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম চালু রাখার ঘোষনা দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকে এ অব্দি বৈশাখের আয়োজন থেকে কখনো শিক্ষার্থীরা তাদের গুটিয়ে রাখেনি। তাই নিজেদের উদ্যোগে এবারে বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈশাখের আয়োজন করেছি সকল শিক্ষার্থীরা মিলে। শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম জানান, ক্যাম্পাসে থাকা সকল শিক্ষার্থীদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে দুদিন আগেই আমরা বৈশাখ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেই। তাই ভিসির পদত্যাগের দাবীতে চলমান আন্দোলন ২ দনি স্থগিত রাখা হয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পহেলা বৈশাখের দিন সকাল ১০ টায় অমঙ্গল দূর করতে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। যা একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে পূনরায় সেখানে এসে শেষ হয়। এরপর বেলা ১১ টায় মুড়িমুড়কি বাতাসার আপ্যায়নের সাথে সাথে নেচে-গেয়ে বৈশাখ উদযাপন করেন। বেলা ১২ টায় যেমন খুশি তেমন চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও দুপুর ১টায় হাড়ি ভাঙ্গা প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে রয়েছে উন্মুক্ত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শিক্ষার্থী লোকমান হোসেন জানান, শিক্ষার্থীদের এ বৈশাখী আয়োজন উপভোগ করতে সকালে শিক্ষকদের একাংশ ক্যাম্পাসে এসেছেন, সময় কাটিয়েছেন আমাদের সাথে।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় আন্দোলন করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এসএম ইমামুল হক শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেয়। এর প্রতিবাদে জোরদার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছিলো শিক্ষার্থীরা।
২৬ মার্চ থেকে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি প্রধান, ডিসি অফিস ঘেরাও, বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ, নিজেদের শরীরের রক্ত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে লিখে ভিসি’র পদত্যাগ দাবী, ভিসি’র কুশপুত্তলিকা দাহ ও মশালমিছিল সহ নানা কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। তবে পহেলা বৈশাখের কারনে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার জন্য গতকাল শনিবার ও আজ রোববার কোন কর্মসূচি দেয়নি শিক্ষার্থীরা। তবে সোমবার থেকে নতুন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্দোলন শুরু হবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।