দ্বিখন্ডিত ঝালকাঠি বিএনপি

ঝালকাঠিতে বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব আবারো প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। এবার জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র বহির্ভুত কাজ, পরিক্ষিত নেতাকর্মীদের পাশকাটিয়ে অনেচা ও অযোগ্য লোক দিয়ে একেরপর এক ইউনিয়ন কমিটি গঠন করার অভিযোগ উঠেছে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির একাংশ ও সদর উপজেলা বিএনপির একাংশ যৌথভাবে এ অভিযোগ করেন।
এদিকে জেলা বিএনপির মূল ধারার অংশ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ করেছেন অভিযোগকারী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। দলকে দ্বিখন্ডিত করার পেছনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির কয়েকজন সদস্য ও সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক কয়েকজন নেতাকে দায়ি করা হচ্ছে। উভয় গ্রুপই আলাদাভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন। এতে বিভক্ত হয়ে পড়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীরাও। গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ঝালকাঠিতে আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করেছে জেলা বিএনপির দুই অংশ। দুটি অনুষ্ঠানেই নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে অংশ নেন। আলাদা কর্মসূচিতে বক্তারা এক পক্ষ অপরপক্ষের সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন। একই সময় পৃথক অনুষ্ঠান পালন করায় উভয় পক্ষই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এদিকে ঝালকাঠি জেলা বিএনপির অসাংগঠনিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিকেলে শহরের আমতলা সড়কের দলীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির একাংশ ও সদর উপজেলার বিএনপির একাংশের অনুগত উপজেলার ১০ ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ এতে অংশ নেন। অনুষ্ঠিত সভায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ুন খন্দকার, জেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক শাহআলম মল্লিকসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সরদার এনামুল হক এলিন। বক্তারা জানান, বর্তমান সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠনতন্ত্র বহির্ভুতভাবে পরিক্ষিত নেতাকর্মীদের পাশকাটিয়ে অনেচা, অযোগ্য লোক দিয়ে একেরপর এক ইউনিয়ন কমিটি গঠন করে যাচ্ছেন। তাঁরা জেলা বিএনপিকে অসাংগঠনিক, অগঠনতান্ত্রিক আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে প্রকৃত দলপ্রেমী নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করার আহবান জাানান।
জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক খন্দকার অহিদুল ইসলাম বাদল বলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে আমাদের রাখা হয়নি, এতেও কোন রাগ-ক্ষোভ নেই। কিন্তু দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানও তারা আমাদের জানায় না। জিয়াউর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ করি, লালন করি। জেলা ও সদর উপজেলা কমিটি অযোগ্য লোকদের দিয়ে করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নুপুর বলেন, কেন্দ্র থেকে আহ্বায়ক কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। এই কমিটির নেতৃত্বেই দলের সকল কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আমাদের সঙ্গেই আছেন। কয়েকজন এ কমিটি মানতে পারছেন না, তাঁরা আলাদা কর্মসূচি পালন করছেন, মূল ধারার কমিটির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন। বিষয়টি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে জানানো হয়েছে। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের যেসব কমিটি দিয়েছে, সেখানে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের পদ দেওয়া হয়েছে। যারা এ কমিটিগুলোর সমালোচনা করছেন, তাঁরা দলের মঙ্গেল চায় না।
এইচেকআর