নলছিটিতে সরকারি স্টল নিয়ে দ্বন্দ্ব : তালা ঝুঁলিয়ে দিলেন ইউএনও

ঝালকাঠির নলছিটি শহরের স্টেশন রোডের শতাধিক সরকারি স্টল বছরের পর বছর লিজগ্রহীতারা মধ্যস্বত্ত্বভোগী হিসেবে ভাড়াটিয়া বসিয়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কেউ কেউ বেআইনিভাবে এর পজেশনও বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে নতুন মলিক ও ভাড়াটিয়াদের সাথে সৃষ্টি হচ্ছে দ্বন্দ্ব।
এ ধরণের একজন ভাড়াটিয়া মো. জলিল ফকির। ১১ বছর ধরে একটি স্টলে ‘জলিল স্টোর’ নামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে তাঁর। লিজ গ্রহীতা মালিক পক্ষ তাকে নেমে যেতে বললে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুধবার রাতে দোকানে তালা ঝুঁলিয়ে দেয়।
জানা যায়, স্টলের লিজ গ্রহীতা আব্দুল মন্নান খানের কাছ থেকে ১১ বছর আগে এ স্টল ভাড়া নিয়ে ব্যাবসা চালিয়ে আসছেন পূর্ব মালিপুর গ্রামের আব্দুল জলিল ফকির। আব্দুল মান্নানের মৃত্যুর পরে স্ত্রী দিলারা বেগম লিজ নেওয়া স্টলের পজেশন বেআইনিভাবে অন্যের কাছে বিক্রি করে দেন। দীর্ঘ দিন ওই স্টলে ব্যবসা পরিচালনা করে জলিল ফকির পরিচিতি অর্জন করেন। এ কারনে স্টলটি বাৎসরিকভাবে লিজ পাওয়ার জন্য তিনি নিজেই জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন। এ নিয়ে আদালতে মামলাও করেন তিনি। ভাড়াটিয়া জলিল ফকিরের গোপন আবেদনের খবর শুনে অষন্তুষ্ট হন লিজ গ্রহীতার স্ত্রী। তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভাড়াটিয়াকে নেমে যেতে বললেও তিনি তা শুনছেন না।
এদিকে ব্যবসায়ী জলিল ফকিরকে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মামুন মাহমুদের নেতৃত্বে এবং পুলিশের সহায়তার জোরপূর্বক উচ্ছেদের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। দোকানি আব্দুল জলিল পজেশন কিনতে চাইলেও তাকে দেওয়া হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা সিকদারের নির্দেশে স্টলে তালা ঝুঁলিয়ে দেওয়া হয়।
জলিল ফকিরের ছেলে সুমন ফকির বলেন, স্টলের মধ্যে মালামাল রেখেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গতরাতে (বুধবার রাতে) তালা ঝুঁলিয়ে দিয়েছেন। এতে দ্রুত পচনশীল মালামালগুলো নষ্ট হয়ে গেলে লোকসানে পড়তে হবে। তিনি স্টলটি খুলে দেওয়ার দাবি জানান।
পৌর কাউন্সিলর মামুন মাহমুদ বলেন, ভাড়াটিয়া জলিল ফকির অন্যায়ভাবে স্টলের মালিকানা দাবি করছেন। তাকে ৭ অক্টোবরের মধ্যে মালামালসহ নেমে যেতে বলেছেন ইউএনও। কিন্তু তিনি এখনো নামছেন না। জোর করে আমরা কাউকে নামাতে আসিনি।
দিলারা বেগম বলেন, জলিল ফকির আমার ভাড়াটিয়া। আমি তাকে বলেছি দোকান ছেড়ে দিতে, কিন্তু ওনি তা শুনছেন না। তিনি নিজেই দোকানের মালিক দাবি করে আসছেন। আমি জেলা প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু সমাধান দাবি করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনাটি নিয়ে আদালতে একটি মামলা হয়েছে, আদালত যে সিদ্ধান্ত দিবেন সে অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া অন্যকোন অভিযোগ পাওয়া গেলে খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি। তবে এ ব্যাপারে ক্যামেরার সামনের কথা বলতে রাজি হয়নি ওই সড়কের অন্য স্টলের লিজ গ্রহীতারা।
এইচেকআর