ঢাকা শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news

ভাণ্ডারিয়ার ৪৭টি মন্দিরে চলছে শেষ মুহূর্তে প্রতিমা রং এর কাজ

ভাণ্ডারিয়ার ৪৭টি মন্দিরে চলছে শেষ মুহূর্তে প্রতিমা রং এর কাজ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া পৌরসভাসহ উপজেলার বাকি ছয়টি ইউনিয়নে এবছর ৪৭টি মন্দির ও মন্ডবে সনাতন (হিন্দু) ধর্মালম্বীদের বছরের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে আজ বুধবার মহালয়া পর্বের মধ্য দিয়ে দেবী পক্ষের সূচনায় মর্তে পূজার আগমনী বার্তা শুরু হয়।

এবছর দেবী দুর্গা মা’র ঘোটকে আগমন এবং দোলায় প্রস্থান ঘটবে। হিন্দু সাস্ত্রমতে জগতে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি নিয়ে দেবী দুর্গা মা আসছে তাই শরতের শিউলী ঝরা স্নিগ্ধ বাতাসে ধ্বনিত শাঁখ, ঢাকের বাদ্য আর নারী ভক্তদের উলুধ্বনির মাধ্যমে মাকে বরণ করা হবে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও।

এ উপলক্ষে পাঁচ দিন ব্যাপী দুর্গোৎসবের মধ্যে আগামী ১১ অক্টোবর সোমবার পূর্বাহ্নে মঙ্গলঘট স্থাপন ও অপরাহ্নে পঞ্চমী বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে মঙ্গলবার সপ্তমী, বুধবার মহাষ্টমী ,বৃহস্পতিবার মহানবমী এবং শুক্রবার বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গা দোলায় মর্ত্যলোক থেকে প্রস্থান করবেন।

এদিকে আগামী সোমবার থেকে পাঁচদিন ব্যাপী উৎসবকে ঘিরে গত কয়েকদির ধরে উপজেলার ৪৭টি মন্দিরে চলছে মৃৎশিল্পীদের দুর্গা প্রতিমা তৈরীর শেষ মুহূর্তের রংএর কাজ। এক দিকে সারা দেশে যেমন অতিমারি করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় থাকতে চলছে সাবধানতা তেমনি বছরের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে রয়েছে নানা আনুষ্ঠানিকতা। প্রতিমা তৈরীতে মৃৎশিল্পীরাও তাদের নির্মাণ শৈলিতে এনেছেন আধুনিক নান্দনিকতার ছাপ। ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ১নম্বর ভিটাবাড়িয়া ইউনিয়নে ৯টি, ২নম্বর নদমুলা শিয়ালকাঠী ইউনিয়নে ৭টি, ৩নম্বর তেলিখালী ইউনিয়নে ৩টি, ৪ নম্বর ইকড়ি ইউনিয়নে ১০টি, ৫নম্বর ধাওয়া ইউনিয়নে ৮টি, পৌর সভায় (সাবেক ৬নম্বর সদর) ৭টি এবং ৭নম্বর গৌরীপুর ইউনিয়নে ৩টি মন্দিরে অনুষ্ঠিত হবে পূজা।
 
এসকল মন্দির ও মন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, সর্বত্র শেষ মুহূর্তে প্রতিমা তৈরী, মন্দির ও মণ্ডপ নান্দনিক ও সুসজ্জিত করতে আয়োজকবৃন্দ সার্বিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। আগত ভক্তদের আকৃষ্ট করতে ভিতরে ভিতরে চলছে আয়োজকবৃন্দের নানা চেষ্টা।
ভাণ্ডারিয়া উপজেলা কেন্দ্রীয় মদন হোমন জিউর মন্দিরে আলাপকালে ফরিদপুর থেকে আগত মৃৎশিল্পী সমীর পাল জানান, ১৫বছর বয়স থেকে তিনি এ পেশায় কাজ করছেন। শুরুতে একটি প্রতিমা ৩জন হেলপার নিয়ে ১৫০০টাকায় নির্মাণ করলেও যে সাচ্ছন্দ্যে থাকা যেত। এখন ৭/৮ জন হেলপার এবং দেড় লাখ টাকা মজুরিতেও সে ভাবে থাকা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। এ মন্দিরের প্রতিমা তৈরীতে তিনি পাবেন প্রায় দেড় লাখ টাকা এবং উপজেলার অন্য স্থানে আরো প্রায় ৪/৫টি মন্দিরে প্রতিমা তৈরীতে পাবেন আকার ভেদে ৭০,৮০ হাজার আবার কোন প্রতিমায় প্রায় এক লাখ টাকা।

উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কিরন চন্দ্র বসু জানান, ইতোমধ্যে আমাদের সাথে জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার এবং স্থানীয় প্রশাসনের সাথে মতবিনিময় শেষে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা কমিটি উপজেলার প্রত্যেক মন্দির কমিটিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে উৎসব উদযাপনের জন্য বলা হয়েছে।

এদিকে পূজাকে ঘিরে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্ব স্ব দপ্তর সচেতন রয়েছে বলেও জানান স্থানীয় সরকারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক সীমা রানী ধর এবং ভাণ্ডারিয়া থানার ওসি মো. মাসুমুর রহমান বিশ্বাস।   
অন্যদিকে পূজায় বিভিন্ন বেসরকারি অনুদান ছাড়াও সরকারি ভাবে প্রতি মন্দিরের জন্য ৫০০কেজি চাল বরাদ্দ হয়েছে বলেও জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

 


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন