কাঠালিয়ায় চিকিৎসকের অভাবে রোগীদের চরম দুর্ভোগ

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজাকে সামনে রেখে কাঠালিয়া সদরে ডাক্তার শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে চিকিৎসা সেবায় চরম বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
গত ৪ অক্টোবর থেকে স্থানীয় মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা ডাঃ দিলীপ চন্দ্র হাওলাদার ভারতে অবস্থান করছেন। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে তিনি ভারতে যাওয়ায় শত শত রোগী ও স্বজনরা মারাত্মক চিকিৎসা সংকটে পড়ছেন।
কাঠালিয়া সদরে ডাক্তার সাহেবের দু’টি চেম্বার ও একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এ গুলোতে প্রতিদিন শতশত রোগীর চিকিৎসা, পরামর্শ ও পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ চলত। গত ৪ অক্টোবর থেকে এগুলো বন্ধ রয়েছে। ফলে ডাক্তার দিলীপ চন্দ্র হাওলাদারের উপর নির্ভরশীল রোগী ও স্বজনরা বিপাকে পড়েছেন।
বিশেষ করে গর্ভবর্তী মা ও শিশু, বয়স্ক রোগী, ছোট-খাটো অপারেশনের রোগীরা দূরদূরান্ত থেকে এসে ফিরে যাচ্ছেন। অপরদিকে লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক ডাঃ সুজিত বৈদ্য কয়েকদিন যাবৎ তার নিজ বাড়ী গোপালগঞ্জে পারিবারিক কাজে অবস্থান করছেন। সেখান থেকেও রোগীরা স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সব মিলিয়ে পুরো কাঠালিয়া উপজেলা গত এক সপ্তাহ যাবৎ চিকিৎসক শূন্য থাকায় এখানকার মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
আওরাবুনিয়া গ্রামের মোসাদ্দেক বিল্লাহ জানান, আমি বোন সর্মীকে কোন ডাক্তার না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পার্শ¦বর্তী ভান্ডারিয়া উপজেলায় চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
কাঠালিয়া বাজারের স্যালুন ব্যবসায়ী দিপু শীল জানান, আমার স্ত্রীর গাইনী সমস্যা নিয়ে ৯ অক্টোবর ডাক্তারের কাছে আসলে ডাক্তার না পাওয়ায় বরিশাল যেতে হয়েছে।
চেঁচরীরামপুর ইউনিয়নের জাকিয়া জানান, আমার সন্তান নিয়ে ডাক্তার দিলীপ চন্দ্র হাওলাদারের কাছে আসলে তার চেম্বার বন্ধ পাই। পরে ভান্ডারিয়ায় চিকিৎসা করাই।
কাঠালিয়া, বাসস্ট্যান্ড রোড মায়ের দোয়া মেডিকেল হল, ঔষুধ ব্যবসায়ী ফার্মাসিষ্ট মোঃ এনায়েত হোসেন জানান, গত এক সপ্তাহ যাবৎ কাঠালিয়ায় কোন এমবিবিএস চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা আমাদের কাছে ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ওষুধ কিনতে আসেন। কিন্তু রোগীদের চাহিদা সত্ত্বেও আমরা ওষুধ বিক্রি করতে পারছি না। ফলে দুর্ভোগে পড়ছেন রোগীরা।
এদিকে দুর্গা পূজা, বৈরী আবহাওয়া ও জনসমাগমের কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (আমুয়া) কাঠালিয়ার আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মিজানুর রহমান জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (আমুয়া) ডাক্তার কম থাকায় কাঠালিয়া সদর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এমবিবিএস চিকিৎসক ছাড়া চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়। এ উপ-কেন্দ্রে দুইজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আছেন, তারাই রোগীদের চিকিৎসা দিবেন।
আসাদুজ্জামান সোহাগ / এমবি
এমবি