ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

Motobad news
শিরোনাম
  • কয়েদিদের নিবন্ধন শুরু ২১ ডিসেম্বর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে বিএনপির শপথ হাদিকে গুলি : শ্যুটারদের পালাতে সহযোগিতার কথা স্বীকার ২ আসামির ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন : প্রেস উইং বরিশাল-৩ আসনে বিএনপির দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠানে দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ   বরিশালে সাবেক ছাত্রমৈত্রী নেতা সাব্বির আহমেদ ইর‍ানের ‍‍ইন্তেকাল বরিশ‍ালে মহান বিজয় দিবসে ছাত্রদল নেতা তরিকুল ইসলাম তারেক’র নেতৃত্বে শোভাযাত্রা  খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার দায়িত্বে  বাড্ডায় ‘লং মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা নির্বাচনে এমপি প্রার্থীদের অস্ত্রের লাইসেন্স দিতে নীতিমালা জারি
  • ডিলার ভাতিজা, চাচায় বিক্রি করেন চাল

    ঝালকাঠিতে ১০ টাকার চাল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ

    ঝালকাঠিতে ১০ টাকার চাল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ
    চাল কম পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগি দরিদ্র এসব মানুষ ।
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    ঝালকাঠিতে হতদরিদ্রদের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রিতে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কার্ডধারীদের জনপ্রতি ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও ওজনে ৫০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত চাল কম দিচ্ছেন ডিলার। কয়েকজনকে সেপ্টেম্বর মাসে চাল দেওয়া হয়নি। বুধবার ও বৃস্পতিবার ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী গ্রামে চাল বিক্রির সময় অনিয়মের বিষয়টি ধরা পড়ে।

    জানা যায়, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হতদরিদ্র ৭৯৩ জনের তালিকা করে কার্ড দেওয়া হয়। এ ইউনিয়নে দুইজন ডিলার ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করেন। এর মধ্যে দেউরী বাজার এলাকায় চাল বিক্রির জন্য ডিলার নিয়োগ করা হয় আমিরুল বিশ্বাসকে। তিনি ৩৫৫ জন কার্ডধারীর মাঝে জনপ্রতি ৩০ কেজি করে ১০ টাকা দরে চাল বিক্রি করবেন।

    সপ্তাহে সোমবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার এ চাল বিক্রি করা হয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে কার্ডধারী ৬ জনকে চাল না দিয়ে আত্মসাত করার অভিযোগ রয়েছে ডিলারের বিরুদ্ধে। যাদের চাল দিয়েছেন, তাও ওজনে কম। অক্টোবর মাসেও কার্ডধারী হতদরিদ্রদের চাল ৫০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।

    কর্মসূচির সুবিধাভোগীরা অভিযোগ করেন, বাজারের মধ্যে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চাল বিক্রির নিয়ম থাকলেও, আমিরুল বিশ্বাস দেউরী গ্রামের রব মৃধার বাড়িতে বসে এ চাল বিক্রি করছেন। নিয়মানুযায়ী চাল বিক্রির সময় ডিলারকে উপস্থিত থাকতে হবে। কিন্তু আমিরুল বিশ্বাস নিজে উপস্থিত না থেকে চাচা বাদল বিশ্বাসকে দিয়ে চাল বিক্রি করাচ্ছেন। সঠিক মাপে তিনি চাল দিচ্ছেন না কার্ডধারীদের। এতে ওজনে চাল কম পাওয়া ব্যক্তিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।  

     দিয়াকুল গ্রামের মো. ইশ্রাফিল বলেন, বুধবার সকালে চাল আনতে গিয়ে দেখি ডিলার নেই। তাঁর চাচা বাদল বিশ্বাস চাল দিচ্ছে। তাকে ৩০০ টাকা দেওয়ার পরে টিপসই নিয়ে চাল দেয়। পাশের দোকানে গিয়ে মেপে দেখি ২৮ কেজি ৫০০ গ্রাম রয়েছে বস্তায়। আড়াই কেজি চাল কম দেওয়ার বিষয়ে ডিলারের চাচার কাছে জানতে চাইলে, তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে কথা বলেন। চালের বস্তায় ঘাটতি আছে জানিয়ে যা পেয়েছি, তা নিয়ে চলে যেতে বলেন।  কার্ডধারী একই গ্রামের শেসন আলী ফকিরের ছেলে মিলন ফকির বলেন, বাবা অসুস্থ, তাই আমি চাল নিতে এসেছি। সেপ্টেম্বর মাসে আমাদের চাল দেওয়া হয়নি। দুই মাসের চাল এক সঙ্গে চাইলে তা দেওয়া হয়নি। শুধু আমি না, গতমাসে ৬ জনকে চাল না দিয়ে আত্মসাত করা হয়েছে। এ মাসে যে চাল দেওয়া হয়েছে, তাও ওজনে কম। ২৯ কেজি চাল পেয়েছি। টাকা নেয় ৩০ কেজির, অথচ চাল দেয় ২৯ কেজি। এক কেজি তারা আত্মসাত করে।  

    অভিযোগের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসা পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাইদুর রহমান শাহীন বলেন, ওজনে চাল কম পেয়ে আমার কাছে অনেকেই ফোন করে। আমি এসে দেখি, ঘটনা সত্য। প্রত্যেককে ওজনে কম দেওয়া হচ্ছে। কাউকে আধা কেজি, কাউকে দেড় কেজি পর্যন্ত ওজনে কম দিচ্ছে। চাল বিক্রির সময় ডিলারের এখানে থাকার কথা, কিন্তু তিনি চাচাকে দিয়ে চাল বিক্রি করাচ্ছেন।  এ ধরণের অনিয়ম আমরা সহ্য করবো না। গ্রামের দরিদ্র মানুষের তালিকা আমরাই করেছি। তারা সঠিক ওজনে চাল পাবে এটাই ডিলারের কাছে আশাকরি। কিন্তু তিনি অনিয়ম করছেন, এ ব্যাপারে আমরা সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।

    ডিলার আমিরুল বিশ্বাস বলেন, জরুরী কাজে আমি বরিশালে গিয়েছিলাম। এই সময় চাচাকে দায়িত্ব দিয়েছি। ৫০ কেজির সবগুলো বস্তাতেই চালের ঘাটতি থাকায় আমরাও কার্ডধারীদের ২০০ গ্রাম করে চাল কম দিয়েছি। ইচ্ছে করে কোন অনিয়ম করা হচ্ছে না। আমি একজন সৎ মানুষ, কাউকে ঠকানোর কোন ইচ্ছাই আমার নেই।

    ঝালকাঠি সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শাহনাজ পারভিন বলেন, ডিলারের উপস্থিতি ছাড়া কাউকে চাল দেওয়ার নিয়ম নেই। ওজনে কম দেওয়ার কোন সুযোগই নেই। আমাদের চালে কোন ঘাটতি থাকে না। ডিলারের অনিয়মের ব্যাপারে অনেকে ফোনে জানিয়েছেন, আমরা তদন্ত করে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নিবো।

     


    এইচকেআর
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ