ঢাকা বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫

Motobad news
ডাক্তার, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শূন্য ৭২ পদ

কাউখালী হাসপাতালে জরুরী বিভাগে কাজ করেন মালি-পরিচ্ছন্নতা কর্মী

কাউখালী হাসপাতালে জরুরী বিভাগে কাজ করেন মালি-পরিচ্ছন্নতা কর্মী
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পিরোজপুরের কাউখালীতে দেড় লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র চিকিৎসার আশ্রয়স্থল কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। হাসপাতালের চিত্র দেখলে মনে হবে এ যেন চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র নয় যেন একটি ভুতুড়ে কারখানা। এখানে তিন যুগেও কোনো ভবন নির্মাণ হয়নি। ভাঙা ও জরাজীর্ণ ভবনে দীর্ঘ যুগের পর যুগ চিকিৎসা প্রদান করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের চিকিৎসক  এসে এ অবস্থা দেখে কেউ চিকিৎসা সেবা দিতে চাননা। হাসপাতালের ডাক্তার কোয়ার্টার নেই। বাহির থেকে চিকিৎসক চাকরি করতে এসে  মানসম্মত বাসভবন না থাকার কারণে দূর থেকে কোনো চিকিৎসা এসে চাকুরী করতে চায়না।

স্বাস্থ্য বিভাগের ১০৫টি পদের অধিকাংশ পদ শূন্য রয়েছে। জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারি, মেডিসিন, গাইনি, এনেসথেসিয়া ও মেডিকেল অফিসার এই  ৫টি পদশূন্য রয়েছে।  মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফার্মা ও ল্যাব ৪টি পদ, হিসাব রক্ষক, ভান্ডার রক্ষক, অফিস সহকারী, স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকর্মী, টিএলসিএ সহ মোট ১৬ পদে নেই কোনো জনবল।

এছাড়াও অফিস কর্মচারী ওয়ার্ড বয় ৩ জনে ১ জন, আয়া ৩ জনে ১জন রয়েছে। কুকের পদ ২ দুটিই শ‍ূন্য রয়েছে। এম এল এস এস ৪ জনের পরিবর্তে রয়েছে মোট ১জন। ঝাড়ুদার ৫ পদের দুটি শূন্য রয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা  স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১০৫ টি পদের মধ্যে ৩১ টি পদ শূন্য রয়েছে। অতি জরুরি এ সমস্ত পদ গুলো শূন্য থাকায় স্বাস্থ্যসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় জনবল সংকটের কারণে জরুরী বিভাগে ওয়ার্ড বয় ছাড়া কোনো কার্যক্রম চলছে না। সেখানে  মালি ধলু সে ওয়ার্ড বয়ের দায়িত্ব  পালন করছেন। পরিচ্ছন্নতা কর্মী মাছুম হোসেন  সেও ওয়ার্ড বয়ের কাজ করছে।জরুরী বিভাগে কোনো রোগী ভর্তি হলে তার সেলাই, ব্যান্ডেজসহ নানা কাজের চিকিৎসার সহযোগী হিসাবে এরাই কাজ করছেন। ওয়ার্ডবয় হিসেবে কর্মরত মালি ধলুর কাছে জানতে চাইলে জানান, তিনি নিজেই জরুরী বিভাগে সেলাই ব্যান্ডেজসহ নানা কাজে সহযোগিতা করছেন। তিনি আরো জানান, ওয়ার্ড বয় না থাকায় তার কাজের বাইরেও রোগীদের বাঁচানোর জন্য জরুরি বিভাগে কাজ করতে হয় প্রতিদিন। হাসপাতালে বর্হির্বিভাগের রোগী কাঠালিয়া নিবাসী ইমাম হোসেন জানান, হাসপাতালে ভবনের দুরবস্থা এবং জনবল সংকটের কারণে হাসপাতালে সঠিকভাবে চিকিৎসা পেতে অনেক সময় পার করতে হয়।

হাসপাতাল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা পেয়ারু, নয়নসহ অনেকেই অভিযোগ করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ হাবিবুর রহমান প্রায়ই প্রশিক্ষণ, অফিসিয়াল কাজ সহ বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে তিনি ঢাকায় থাকেন। ফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসনিক ব্যবস্থা অনেকটা দুর্বল।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ হাবিবুর রহমান জানান, জনবল কম থাকায় জরুরী বিভাগে সহায়তা করার জন্য পরিচ্ছন্ন কর্মী মালি এদেরকে কাজে লাগানো হয়। রোগীদের জীবন রক্ষা করার জন্য এদের সহযোগিতা নিয়ে জরুরী বিভাগ অনেক সময় চালাতে হয়। তিনি আরো জানান, জনবল প্রাপ্তি সাপেক্ষে তাদেরকে এ কাজে সহায়তা প্রয়োজন হবে না।

 

 


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন