ঢাকা রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news

বাড়ি পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা গৃহহীনদের

বাড়ি পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা গৃহহীনদের
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর  রহমানের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমী ও গৃহহীনদের স্থায়ী আশ্রয়ের জন্য সরকারি ঘর পেয়ে বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ূ কামনায় প্রাণ ভরে দোয়া করেন সুবিধাভোগীরা।  উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়ন কেন্দ্রে গিয়ে সুবিধাভোগীদের সাথে আলাপ কালে এ তথ্য পাওয়া যায়। 

উপজেলার চরখালী আশ্রয়নের রোকেয়া বেগম বলেন, এই ঘরটি এখন আমার শান্তির নীর ! উপকূলীয় অঞ্চল পিরোজপুরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ২০০৭সালের প্রলয়ংঙ্কারী ঘুর্ণিঝর সিডরের পর আইলা,আম্ফান সহ নানা সময়ে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকা স্বামী হারা ৬৪বছরের বৃদ্ধা রোকেয়া বেগম। বলেশ্বর নদের শাখা এক সময়ের প্রমত্তা কচাঁ নদী তীরবর্তী ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী এলাকার জেলে খলিল হাওলাদরের স্ত্রী রোকেয়া বেগম। 

তিনি জানান ১৪বছর পূর্বে স্বামী হারা হয়ে তিন সন্তানকে নিয়ে নানা সময়ে নানা স্থানে থাকতেন আশ্রিতা বর্তমানে উপজেলার চরখালী আশ্রয়নে বসবাসরত ১৫টি পরিবারের মধ্যে একটি রোকেয়া বেগমের। ২শতাংশ জমির উপর টিনসেট একটি আধাপাকা ঘরে ছেলে শফিকুল এবং ছেলে বৌ লাবনীকে নিয়ে ছোট্র ঘরটিতে পরিপাটি ভাবে বসবাস করেন। ঘরের পাশে রোপন করেছেন ফল,সবজি। ওই আশ্রয়ণে স্বামী পরিত্যাক্তা হাসিনা বেগম জানান, ২৬বছর পূর্বে দরিদ্র জেলে বাবা যৌতুক দিতে না পাড়ায় স্বামী সাকায়েত জোমাদ্দার ৭মাসের একটি শিশু সন্তান রেখে চিটাগং গিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে অধ্যাবদি কোন খোঁজ নেয়নি। সে থেকে এ বাড়ি ও বাড়ি ঝি এর কাজ করে সন্তানকে নিয়ে জীবন যুদ্ধ চালিয়ে আসছেন। পরে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা বেতনে কেয়ারে চাকুরী হয় হাসিনার। গেল বছর আশ্রয়নে একটি ঘর পেয়ে বেজায় খুশি সে।

 শুক্রবার (১৪এপ্রিল) সরেজমিনে গেলে ওই আশ্রয়নের সুবিধাভোগী বাকিরা জানান, রোকেয়া,হাসিনা, দোলন সহ এখানে আমরা যারা ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের হলেও সকলে মিলে মিশে থাকি। ঘর পাওয়ার আগে যখন মানুষের বাড়ি বাড়ি আশ্রিতা থাকতাম তখন মনে হত পৃথিবীটা কত নিষ্ঠুর ! আল্লাহ্তালার রহমতে প্রধান মন্ত্রীর উছিলায় একটি ঘর পেয়েছি। খারাপ ভালো যাই হোক অন্যের বাড়ি আশ্রিতা তো থাকতে হবেনা! নামাজ পরে শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি যেন আমাদের মত আরো যারা অসহায়,ছিন্নমূল তাদেরও এভাবে একটি নিজস্ব ঠিকানা থাকে। 

এদিকে উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন অধিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে যানা জায়, প্রায় দুই বছর পূর্বে ভান্ডারিয়া পৌর সভাসহ উপজেলার বাকি ছয়টি ইউনিয়নে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ৪৬০ জন, ভূমী ও গৃহহীণ পরিবারের জন্য বরাদ্দকৃত ঘরের ৯০ভাগ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ চলমান আছে যা আর ১/২মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। যে সকল ঘর নির্মানের কাজ শেষ হয়েছে সে সকল ঘরে সুবিধাভোগীরা বসবাস শুরু করেছে বলেও জানান ওই দপ্তরের কর্মকর্তা মো. আওলাদ হোসেন।  

অন্যদিকে বেশ কয়েকদিন পৌর সভা সহ উপজেলার বাকি ছয় ইউনিয়নে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কিছু কিছু সুবিধাভোগীরা পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ায় সরকারের পাওয়া ঘরের সাথে নিজেদের উদ্যোগে কিছু সম্প্রসারণ করেছে। পাশা পাশি হাঁস,মুরগি,পশু পালন ছাড়াও মৌসুমি সবজি চাষ করতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক সীমা রানী ধর জানান, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়নের অধিকার ,শেখ হাসিনার উপহার নামক প্রকল্পের আওতায় সরকারি ভাবে ১ম,২য় ও ৩য় পর্যায়ে মোট ৬৬০ জনকে এ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। ১ম, ২য় পর্যায়ের ৪৬০জন আশ্রয়ন সহ এসকল ঘরে সুবিধাভোগীরা বসবাস শুরু করেছে। এবং তৃতীয় পর্যায়ে যে ২শজনকে জন প্রতি ২শতাংশ জমির উপরে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনসেট আধাপাকা ঘর এবং পানি ও বিদ্যুতের ব্যাবস্থা করার জন্য ইতো মধ্যেই আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুুতি নেয়া হয়েছে।
 

এস. সমদ্দার/ভান্ডারিয়া


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন