ঢাকা রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news

ভাণ্ডারিয়া হাসপাতালে বাড়ছে ডায়েরিয়া রোগীর ভিড়

ভাণ্ডারিয়া হাসপাতালে বাড়ছে ডায়েরিয়া রোগীর ভিড়
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় ব্যাপক হারে ডায়েরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় বারান্দায় চিকিসিৎসা সেবা নিতে দেখা গেছে রোগীদের। ঝৃ-তু প্রক্রিয়ায় গ্রীষ্মের শুরুর দিক থেকেই প্রচন্ড গড়ম পড়তে শুরু করেছে। গত কয়েক দিনের তীব্র গরমে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে অন্যান্য সময়ের চেয়ে তিন থেকে চার গুন। 

তবে হাসপাতালটি ৩১ থেকে  ৫০ শয্যা থেকে ১০০সয্যায় উন্নিত হলেও ৩১সয্যার জনবল দিয়ে চলছে হাসপাতাল। এদিকে রোগীর সংখ্যা বাড়ার ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঠিক তদারকিতে প্রতিদিন তিন সদস্যের  ৮টি টিম ভাগ করে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সেবা প্রদান করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। সরেজমিনে দেখা যায়,সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ার ফলে এ হাসপাতালে এ উপজেলা ছাড়াও পার্শবর্তী রাজাপুর, কাঠালিয়া, আমুয়া ,মোরেলগঞ্জ সহ বিভিন্ন উপজেলার সাধারণ রোগী সহ ডায়েরিয়ার রোগীও ভর্তি রয়েছে। রোগীদের সাথে আলাপকালে মোরেলগঞ্জের চর আইচা, ডেউয়াতলা এলাকার রোগীরা জানান, এই ডাক্তার আগে আমাদের হাসপাতালে ছিল। এই ডাক্তার (বর্তমান টিএইচ) আমাদের ওখানে থাকা কালীন রোগীদের নিয়মিত খোঁজ খবর রাখায় আমাদের এলাকার রোগীরা দ্রুত সুস্থ্য হয়ে যেত। সে জন্য এখানে আসা। তার চেয়ে বড় কথা হলো এ হাসপাতালের পরিবেশ অনেক ভালো তাই আমরা এখানে আসছি। 

রাজাপুর,কাঠালিয়ার বিনাপানি, দোগোনা এলাকা সহ অন্যান্য উপজেলার রোগীরা জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো এবং হাসপাতালটি উন্নত পরিবেশের হওয়ায় এখানে এসেছি।  আলাপকালে হাসপাতালের (আর এম ও) জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার আলী অজিম জানান,গত বেশ কয়েকদিন ধরে প্রতিদিন ই পানি বাহিত ডায়েরিয়া রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিন সাধারণ রোগী সহ ১০০ থেকে ১২০/১২৫জন রোগীর মধ্যে ৭০/৮০জন ই থাকে ডায়েরিয়ার রোগী। তার মধ্যে প্রতিদিন ভর্তি ই নেয়া হয় ৫৮/৬০/৬৫জন। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, ১০০সয্যার হাসপাতালে যে জনবল থাকার কথা তা নেই। এ হাসপাতালটিতে অক্সিজেন ট্রান্সমিশন পদ্ধতি ছাড়াও অক্সিজেন জার,লাইফ সাপোর্ট এ্যাম্বুলেন্স ছাড়াও সাধারণ এ্যাম্বুলেন্স,জিন এক্সপার্ট মেশিন সহ অন্যান্য আধুনিক মেশিন থাকলেও তা অপারেট করার মত দক্ষ জনবল না থাকায় রোগীদের সঠিক সেবা দান ব্যাহত হয়। 

তার পরেও যে জনবল আছে তা দিয়ে আমরা দুরদরান্ত থেকে সেবা নিতে আসা রোগীদের সেবা প্রদানে অব্যাহত চেষ্টা করে যাচ্ছি। ওয়ার্ডে দ্বায়িত্বরত সিনিয়র নার্স আরিফা  জানান, এক দিকে অতিরিক্ত গড়মে পানির চাহিদা থাকে বেশি , অন্যদিকে রোগীরা সঠিক ভাবে হাত ধোয়া ছাড়াও অপরিস্কার অপরিচ্ছন্ন ভাবে আহার বিহারে এ রোগ দ্রুত ছড়ায়। এই কয়েক দিনে যে সকল রোগী সেবা নিতে আসছে তারা ২/৩দিন পুর সুস্থ্য হলেও সাথে যারা ছিলেন তারা আবার আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে।  

এ বিষয়ে হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামাল হোসেন মুফতী জানান, প্রতি বছর ই এই মৌসুমে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা একটু বেড়ে থাকে। তবে পূর্বের অন্য সব বছরের তুলনায় এ বছর আনুপাতিক হারে ডায়েরিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, হাসপাতলটি আবোকাঠামোগত ভাবে ১০০সয্যায় উন্নিত হয়েছে, যন্ত্রপাতিও মোটামুটি যা আছে তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন সব সেক্টরে দক্ষ জনবল বাড়ানো। কারন এটি এখনো ৩১সয্যা হাসপাতালের জনবল দিয়ে চলে। সেই ৩১সয্যার জনবলেও আধুনিক মেশিন অপারেট করার দক্ষ লোক নেই। 

তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণির জনবল তো নাই বললেই চলে। তিনি আরো জানান, বর্তমানে ভূগর্ভস্থ্য পানির লেয়ার দেবে যাওয়ায় এবং সুষ্কমৌসুমে অপরিস্কার অপরিচ্ছন্ন পানি ব্যবহারের ফলে ডায়েরিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। সুপেয় পানি পানের জন্য আমরা আজ শুক্রবার থেকে মাইকিং করে উপজেলার সকল কমিউনিটি ক্লিনিকের মাঠ কর্মীদের মাধ্যমে পানি বিসুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ ছাড়াও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য জনসচেতনতা মূলক প্রচার প্রচারণা চালাবো। 

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামাল হোসেন মুফতী আরো জানান,পিরোজপুর জেলার মধ্যে এ উপজেলায় ডায়েরিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ার ফলো ইতো মধ্যেই সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ছাড়াও স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমি স্যার ব্যক্তিগত ভাবে নানা সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী দেয়ার পাশা পাশি সব সময় এ হাসপাতালের সার্বিক খোঁজ খবর নেয়ার ফলে আমরা রোগীদের উন্নত সেবা প্রদানের জন্য অব্যাহত ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন