‘সাত মাসের রুকাইয়া জানবে না বাবার আদর কী’

স্ত্রী, তিন কন্যাসন্তান ও বাবা-মাকে নিয়ে সংগ্রামী জীবন ছিল চালক সোহেল মিয়ার। অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে পরিশ্রমের বিকল্প নেই, স্ত্রীকে প্রায় বলতেন সেই কথা।
কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানের গাড়ি নিয়ে প্রায় তাকে যেতে হত দূরদূরান্তে। তাতে চিন্তার অন্ত থাকত না পরিবারের। পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তিও ছিলেন সোহেল।
গেল সপ্তাহে সাত মাস বয়সী কন্যাসন্তান রুকাইয়াকে রেখে যখন চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন সোহেল, স্ত্রীকে বলেছিলেন, যেন সাবধানে থাকেন।
শনিবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোর আগুন কেড়ে নিয়েছে সেই সোহেলকে। এজেআর কুরিয়ারের গাড়ি নিয়ে বিএম ডিপোতে গিয়েছিলেন সোহেল।
নিহত সোহেল স্বরূপকাঠি উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের সঙ্গীতকাঠি গ্রামের আবুল কালামের ছেলে।
সোহেলের চাচাতো ভাই শফিকুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সোহেলের মরদেহ শনাক্ত করেন তার স্বজনরা। পরে তার মরদেহ নিয়ে তারা রওনা হয়েছেন সঙ্গীতকাঠির উদ্দেশ্যে।
শফিকুল জানান, নিহত সোহেলের তিনটি কন্যাসন্তান রয়েছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট রুকাইয়া বয়স মাত্র সাত মাস।
স্বজনরা যখনসোহেলের কবর খুঁড়ছেন, দূর থেকে নিষ্পলক তাকিয়ে রয়েছেন সোহেলের দুই মেয়ে।
শফিকুল বলেন, ‘আমার ভাই এমন কইরে চলে যাবে, এই তো ভাবতে পারতেসি না। রুকাইয়ার বয়স মাত্র সাত। মাইয়্যাডা তো বাপের আদর কী হেইয়াই বুঝতে পারবে না।’
সোহেলের শোকার্ত পরিবারকে সান্তনা দিতে গ্রামবাসীরা জড়ো হচ্ছেন তার বাড়ি।
সঙ্গীতকাঠি গ্রামের ইউপি সদস্য আছিয়া বেগম বলেন, পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম সোহেলের বৃদ্ধ বাবা মা এবং বিধবা স্ত্রীর সাথে সাথে তিনটি নাবালক সন্তানের ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকার হয়ে পড়েছে। সমাজের অবস্থাপন্ন মানুষ তাদের পাশে না দাঁড়ালে তারা মানবিক বিপর্যয়ে পড়বেন।
এইচকেআর