নাজিরপুরে জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকিপূর্ণ পাঠদান

পিরোজপুরের নাজিরপুরে বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে চলছে পাঠদান। বিদ্যালয়টির ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। দেয়ালের ইট বের হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা ভয়ে ক্লাসে বসছে না।
এমন করুণ দশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২১ নম্বর কাঁঠালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। জানা গেছে, ১৯৭২ সালে স্থানীয়দের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ওই বিদ্যালয়ের ভবন ১৯৯৪ সালে তৈরি। পরে ২০১৩ সালে তা জাতীয়করণ হয়। স্থানীয় শতাধিক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়টিতে পড়াশোনা করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ে রয়েছে একটি পাকা ভবন। ভবনের ৫টি কক্ষই চরম ঝুঁকিপূর্ণ। রীতিমতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান ও পাঠগ্রহণ। প্রধানশিক্ষকসহ শিক্ষকদের অফিস কক্ষেরও করুণ দশা। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হলে ফারহান আক্তার সুমি ও প্রতাপ বড়াল জানান, শ্রেণিকক্ষের ছাদের পলেস্তরা খসে প্রায়ই নিচে পড়ে। ক্লাস শেষ করে স্যার চলে গেলেই আমরা ক্লাস থেকে বের হয়ে যাই। কেননা আমরা সবসময় ভয়ে থাকি, কখন ছাদের পলেস্তরা ভেঙে মাথায় পড়ে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জেসমিন আক্তার জানান, বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চরম আতঙ্কে আছি। পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ক্লাস শেষ হলেই শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষিকা জান্নাতুন নাঈম জানান, আমাদের বিদ্যালয়টির ভবন বেশ পুরাতন। এর অবস্থা জরাজীর্ণ। শ্রেণিকক্ষ পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শিক্ষকদের বসার রুম ও ভবনটির বাইরের প্রায় সকল স্থানের পলেস্তরা খসে পড়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে আবেদন করেও কোনো ফল পাচ্ছি ন।
তিনি আরো জানান, ভবনের এমন সমস্যার কারণে সুবিধামতো একটি টিনের ঘরে গাদাগাদি করে কয়েকটি ক্লাস নিতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল বাশার জানান, বিদ্যালয়টির ভবনের সকল কক্ষই খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। শিক্ষার্থীরা সবসময় আতঙ্কিত থাকেন। উপজেলা প্রকৌশলীকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। হয়তো শিগগিরই পাকা ভবন বরাদ্দ হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ আব্দুল্লাহ আল সাদীদ জানান, বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সবকটি কক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণার জন্য একটি আবেদন আমরা পেয়েছি। আবেদনটি সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তরে প্রেরণ করেছি। তাদের প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর বিষয়টির ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এইচকেআর