ঢাকা মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news
জাপা নেতাকে কুপিয়ে পা বিচ্ছিন্ন, জাপা’র আল্টিমেটাম

মঠবাড়িয়ায় আসামি গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন 

মঠবাড়িয়ায় আসামি গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন 
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় জাতীয় পার্টি নেতা শফিকুল ইসলামকে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে পা বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় জড়িতদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুুষ্ঠিত হয়েছে। 

রোববার সকালে মঠবাড়িয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সম্মূখ সড়কে উপজেলা জাতীয় পার্টি এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ এর আয়োজন করেন। ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংবাদিক, সুশিল সমাজ ও স্থানীয় নারী পুরুষসহ সহস্রাদিক লোক অংশ গ্রহন করেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নুরুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে ও সংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম টুকু, প্রভাষক মোতালেব হোসেন, ফারুক হোসেন, জাপা নেতা হিরু শরীফ, যুব সংহতির সভাপতি মিজানুর রহমান দুলাল, স্বেচ্ছা সেবক পার্টির আহবায়ক রহমান আল নোমান, এমপির গনসংযোগ কর্মকর্তা আলী রেজা রঞ্জু, পা বিচ্ছিন্ন হওয়া শফিকুলের বাবা আইয়ূব আলী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যাক্তি বর্গ।

বক্তারা বলেন, জাপা নেতা শফিকুল ইসলামের ওপর নৃশংস হামলা মধ্যযূগীয় বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। এ নৃশংস হামলায় জড়িতদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবী জানান। গ্রেফতার করতে ব্যার্থ হলে সারা দেশব্যাপি জাতীয় পার্টি বৃহত্তর আন্দোলন করবে বলে হুমকি দেন। 

জানা গেছে, জমি, ব্যবসা সংক্রান্ত ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদার, তাঁর ছোট ভাই নাসির হাওলাদার, ছেলে শামীম হাওলাদার, সাবেক ইউপি সদস্য সগীর হোসেন হাওলাদার, মুছা শরীফ ও হাবিব আকনসহ বিভিন্ন জনের সাথে শফিকুলের বিরোধ চলে আসছিলো। মুসা শরীফের সাথে চলমান একটি মামলায় শফিকুল আদালতে হাজিরা দিতে বৃহস্পতিবার সকালে মোটরসাইকেল যোগে তুষখালী থেকে মঠবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মাঝেরপুলের সন্নিকটে ফরাজি বাড়ির সামনে কালভার্ট এর উপরে আসা মাত্রই একটি মহেন্দ্র গাড়ি শফিকুলের গতিরোধ করে। এ সময় শফিকুল মোটরসাইকেল থেকে নেমে পিছনের দিকে দৌড় দিলে হামলাকারীরা মাহেন্দ্র থেকে নেমে তাকে ধাওয়া করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে বাম পা বিচ্ছিন্ন করে। এ সময়  এলোপাতাড়ি কোপানোর কারণে শফিকুলের পেটের ভুড়ি বেড়িয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়। স্থানীয়রা আহত শফিকুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে  নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে বরিশাল থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়।

গুরুতর জখম শফিকুল ইসলামের মা মোছাঃ মমতাজ বেগম (৬৫) বাদি হয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে মঠবাড়িয়া থানায় ৭ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ৩ জনের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করেন। আসামিরা হলো তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদারের ছোট ভাই মো. নাসির হাওলাদার (৫০), ছেলে শামীম হাওলাদার (৪২), ছোট মাছুয়া গ্রামের মৃত. ছালাম হাওলাদারের ছেলে ছগির হাওলাদার (৪৫), মধ্য তুষখালী গ্রামের মৃত গণি আকনের ছেলে হাবিব আকন (৫৫), হাবিব আকনের ছেলে হুমায়ূন (২৫), তুষখালী গ্রামের জুলফিকার আলী শরীফের ছেলে খায়রুর ইসলাম মুছা শরীফ (৫০), ছোট মাছুয়া গ্রামের মৃত. আলী হোসেন পঞ্চায়েতের ছেলে বশির পঞ্চায়েত (৪২)।

আহত শফিকুল তুষখালী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও তুষখালী গ্রামের মো. আইয়ূব আলীর ছেলে। ঘটনার দিন বিকেলে পুলিশের হাতে আটক হওয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদারের ছোট ভাই মো. নাসির হাওলাদারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অপর দিকে হামলায় ব্যবহৃত মাহেন্দ্র গাড়িটি পার্শবর্তী ভান্ডারিয়া উপজেলার শিংখালী গ্রাম থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। 

মঠবাড়িয়া থানার ওসি মুহা. নূরুল ইসলাম বাদল বলেন, মামলার এজাহার নামীয় ১ নং আসামী তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদারের ছোট ভাই নাসির হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। হামলায় ব্যবহৃত মাহেন্দ্র গাড়িটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় । অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে গুরুতর আহত জাপা নেতা শফিকুল ইসলামকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে দেখতে ছুটে যান জাতীয় পার্টিও চেয়ারম্যান গোলাম কাদের এমপি, ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ডাঃ মো. রুস্তম আলী ফরাজী। এ সময় তাঁরা শফিকুলের সার্বিক খোঁজ খবর নেন।  


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন