পথ নেই, সাঁকোই ভরসা


ভাণ্ডারিয়ারর ইকড়ী গ্রামবাসীর গ্রামে প্রবেশ ও বের হতে একমাত্র ভরসা একটি বাঁশের সাঁকো। বিকল্প কোনো পথ না থাকায় এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়েই চলাচল করতে হয় গ্রামবাসীর। স্থানীয়দের উদ্যোগে নির্মিত সাঁকোটি প্রতিবছর নিজেরাই মেরামত করে এ গ্রামের মানুষ চলাচল করছে। দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণে গ্রামবাসীর একটি সড়ক নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের।
উপজেলার ইকড়ী ইউনিয়নের ইকড়ী-তেলিখালী সড়কের আব্দুল লতিফ মাস্টারের বাড়ি সংলগ্ন বিশাল মাঠের মধ্যে অবস্থিত ইকড়ী গ্রাম। এ গ্রামে প্রবেশ বা বের হওয়ার জন্য কোনো সড়ক নেই। শুস্ক মৌসুমে মাঠ পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী সড়কে ওঠা গেলেও বর্ষা মৌসুমে নিজেদের নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকার মানুষের। গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নান ও রফিকুল ইসলাম জানান, বছরের পর বছর এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এ গ্রামের মানুষকে। সাঁকো পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়েছে অনেকে। বর্ষায় দুর্ভোগ বাড়ে। সাঁকো মেরামতে সরকারি অনুদানও পাওয়া যায় না। প্রতিবছর এ গ্রামের বাসিন্দারা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন।
জনপ্রতিনিধিরা দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও পরে আর তা বাস্তবায়ন হয় না বলে অভিযোগ তাঁদের। তাই অবিলম্বে একটি স্থায়ী সেতু অথবা সড়ক নির্মাণে দাবি গ্রামবাসীর। ভুক্তভোগী বাসিন্দা আব্দুল খালেক, আব্দুল ওহাব, রুহুল হাওলাদার, এনামুল হাওলাদারসহ অনেকে জানান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে বারবার ধরনা দিলেও প্রতিকার হয়নি। গত বর্ষার শুরুতে যাতায়াতের জন্য গ্রামের লোকজন নিজ খরচে বাঁশের সাঁকোটি মেরামত করেন। একটি সাঁকো এক বর্ষা মৌসুম পার করার পর আর ব্যবহার করা যায় না। ইকড়ী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল খালেক হাওলাদার আক্ষেপ করে বলেন, 'রাস্তাডা যাতে অয় হে জিন্নে মোরা তো খুব দাফাদাফি করতে আছি। ইউনিয়ন চেহারম্যান, উপরজেলা চেহারম্যান আরো বড়মেয়াদের কইছি, সবাই কয় রাস্তা হইবে, হ্যাতো হয় না। কি আর হরমু, ভোগ (দুর্ভোগ) মোগো কপালে আছে। পারলে মোগো রাস্তাডা অফিসে কইয়া করাইয়া দিয়েন।'
সড়ক সংলগ্ন পশ্চিম ইকড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুল আলম ও পার্শ্ববর্তী তেলিখালী নিশানঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ জানান, সাঁকোটি ভাঙা থাকায় পারাপারে সবসময় ভয়ে থাকে বিদ্যালয়গামী শিশু শিক্ষার্থীরা। বর্ষাকালে বিশালাকৃতির এই সাঁকো পারাপারে আটকাপড়া মানুষদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। প্রায়ই সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে।
অসুস্থ ও বৃদ্ধদের দুর্ভোগের কথা সহজেই অনুমেয়। ইকড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাই হাওলাদার বলেন, রাস্তাবিহীন আটকে পড়া মানুষের ভোগান্তি অনেক। তিনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্ত আওলাদ হোসেন জানান, সাধারণত ৫০ ফুটের বেশি লম্বা সেতু তৈরি করতে পারেন না তাঁরা। এর পরও একটি মাটির রাস্তা করা যায় কিনা সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন তিনি।
এইচকেআর
