বাউফলে দুই শিক্ষার্থীর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন


পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ইন্দ্রকুল উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী মো. নাফিজ মোস্তফা আনসারী (১৫) ও মো. মারুফ হোসেনকে (১৫) পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে নিহত দুই ছাত্রের স্বজন, সহপাঠী, অভিভাবক ও শিক্ষকসহ পাঁচ শতাধিক নারী পুরুষ।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে তাঁরা বাউফল পৌরসভার গোলাবাড়ি থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে বাউফল প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক হয়ে উপজেলা চত্বরে গিয়ে বেলা সাড়ে ১১ টায় মানববন্ধন করে। দুপুর পৌনে একটা পর্যন্ত চলে ওই কর্মসূচি।
মানববন্ধনের সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নাফিজের মা নার্গিস বেগম হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলেন,আমার একটাই দাবি, আমার একমাত্র পুত্র সন্তানকে যারা প্রকাশ্যে খুন করেছে তাদের ফাঁসি চাই। অভিন্নভাবে বলেন মারুফের মা মোসা. আসমা বেগম। মারুফই ছিল তাঁর একমাত্র পুত্র সন্তান। বক্তারা বলেন, খুনিরা সবাই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। নবম শ্রেণির ছাত্র হলেও দুজনের বয়স ১৮ বছরের বেশি। তাঁরাও খুনিদের ফাঁসি দাবি করেন।
উল্লেখ্য, গত ২২ মার্চ বিকেলে বাউফল উপজেলার ইন্দ্রকুল উচ্চবিদ্যালয়ের কাছে পূর্ববিরোধের জেরে হওয়া হামলায় দুই ছাত্র নিহত হয়। নিহত কিশোররা হলো ইন্দ্রকুল এলাকার মো. বাবুল হাওলাদারের ছেলে মো. মারুফ (১৫) এবং একই এলাকার মিরাজ মোস্তফা আনসারীর ছেলে মো. নাফিস (১৫)। তারা ইন্দ্রকুল উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা, শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গায়ে ধাক্কা লাগার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কথা-কাটাকাটি হয়। ওই ঘটনার জেরে গত বুধবার বিদ্যালয় থেকে বাড়িতে ফেরার পথে একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিজ, মারুফ ও সিয়ামের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারুফ, সিয়াম ও নাফিজকে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মারুফ ও নাফিজকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসক ওই দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত নাফিজের মা নার্গিস বেগম বাদী হয়ে ছয় কিশোরের নাম উল্লেখ করে ও আরও পাঁচ কিশোরকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে ২৪ মার্চ, শুক্রবার সকালে বাউফল থানায় একটি মামলা করেন।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিচুল হক বলেন,‘এজাহারভুক্ত জ্ঞাতনামা ছয় আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অধিকতর তদন্ত করে সঠিক বয়স যাছাই-বাছাই করে খুব কম সময়ের মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’
এইচকেআর
