বাউফলে নিখোঁজের ১৭ দিন পর যুবকের লাশ উদ্ধার, আটক ১


নিখোঁজের ১৭ দিন পর কলেজ ছাত্র হৃদয় কবিরাজের লাশ বাউফল উপজেলার একটি খাল থেকে শুক্রবার পুলিশ উদ্ধার করেছে। লাশটি অর্ধগলিত হওয়ায় চেনা যাচ্ছিল না। তবে ওই লাশটি হৃদয় কবিরাজের বলে শনাক্ত করেছে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া জাফর খান (২৫)।
দুপুর ১২ টার দিকে জাফরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাউফল-নওমালা খালের ছহির উদ্দিন বিশ্বাস বাড়ির কাছে খালের মধ্যে থেকে অর্ধগলিত ওই লাশটি এবং হৃদয়ের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে জাফর খানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। জাফর উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের খাজুরবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা হাসেম খানের ছেলে। এলাকায় একজন মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে তাঁর পরিচিতি রয়েছে
হৃদয় কবিরাজ উপজেলার নবারুন সার্ভে এণ্ড পলিটেকনিক ইস্টিটিউটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সপ্তম সেমিষ্টারের ছাত্র। গত ৯ জুলাই সপ্তম সেমিষ্টারের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ওই পরীক্ষায় হৃদয় অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। হৃদয় উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হরেন্দ্র নাথ ওরফে হরো কবিরাজের ছেলে। দুই ভাই-বোনের মধ্যে হৃদয় বড়। বোন অনামিকা বাউফল সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
হৃদয় গত ১১ জুলাই সন্ধ্যার আগ মুহুর্তে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি।এ ঘটনায় হৃদয়ের বাবা হরেন্দ্র নাথ ১৩ জুলাই বাউফল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। নিখোঁজের ১৭ দিন পর হৃদয়ের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
বাউফল থানার পরিদর্শক মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পরে প্রযুক্তির মাধ্যমে হৃদয়ের খুনি জাফরকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয়কে খুন করার কথা জাফর স্বীকার করেছে এবং তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হৃদয়ের লাশ ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, প্রেমঘটিত বিরোধের জেরে হৃদয়কে গত ১১ জুলাই দিবাগত রাত দুইটা থেকে তিনটার মধ্যে জাফর খুন করে লাশ টেনে ওই খালের মধ্যে কচুরিপনা দিয়ে ডেকে রাখে এবং মোটরসাইকেলটি অদূরে খালের মধ্যে ফেলে রেখেছে বলে পুলিশের কাছে ঝাফর স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
এদিকে একমাত্র ছেলে সন্তানকে হারিয়ে পাগল প্রায় হৃদয়ের বাবা হরেন্দ্র নাথ ও মা মিতা রানী। হৃদয়ের বাবা হরেন্দ্র নাথ মুঠোফোনে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলেন,আমাদেরতো সব শেষ কইরা দিল। আমরা এখন কি নিয়া বাঁচমু?’
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আরিচুল হক বলেন, আসল খুনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা জানার জন্য জাফরকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। মামলা প্রক্রিয়াধীন। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এইচকেআর
