গাজায় একের পর এক হাসপাতাল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে


মানবিক সংকট কত ধরনের এবং কি কি হতে পারে, তা প্রতি মুহূর্তে টের পাচ্ছে গাজার ফিলিস্তিনিরা। গোটা উপত্যকাজুড়ে ইসরাইলি দখলদার বাহিনী যে নারকীয় তান্ডব চালাচ্ছে, তাতে মানবতার কোন লেশ মাত্র নেই। গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি গোলাবর্ষণ এবং বিমান হামলায় সেখানে ১৮টি হাসপাতাল সেবা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে বলে খবর দিয়েছে কাতারভিক্তিক টিভি চ্যানেল আল-জাজিরা।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্যসেবা কর্তৃপক্ষের বরাতে আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাষ্ট্র পরিচালিত আটটি হাসপাতালসহ ১৮টি হাসপাতাল গাজায় তাদের কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। গাজাজুড়ে হাসপাতালের পরিস্থিতি বিপর্যয়কর। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের হাসপাতালগুলোর অবস্থা এতোই খারাপ যে তা বর্ণনাতীত। উত্তরাঞ্চলের হাসপাতালগুলো ব্যাপক ওষুধ, খাদ্য এবং জ্বালানি সঙ্কটের মুখে পড়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে গাজাজুড়ে চালানো ইসরাইলের হামলায় ১০ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে। এদের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি শিশু। সেখানে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে এবং অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যা বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গোটা উপত্যকায় নিরাপদ বলতে কোন জায়গা নেই।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কায়লা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক নির্বিচার হামলায় গত ৩১ দিনের মধ্যে গাজা উপত্যকায় মোট ১৭৫ জন চিকিৎসাকর্মী ও আরও ৩৪ জন নাগরিক সুরক্ষাকর্মী নিহত হয়েছেন। গাজার ৩৬ হাসপাতালের মধ্যে ১৬ এবং ৭২ ক্লিনিকের মধ্যে ৫১টি বন্ধ হয়ে গেছে। ইসরাইলের নির্বিচার বোমাবর্ষণ, জ্বালানি তেল, চিকিৎসা সামগ্রী ও ওষুধের স্বল্পতার কারণে এসব বন্ধ হয়ে গেছে।
আল-আহলি আরব হাসপাতালসহ বেশ কিছু চিকিৎসাকেন্দ্র আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়াও, অ্যাম্বুলেন্সের ওপরও হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এসব হামলায় রোগী ও চিকিৎসাকর্মী, উভয়ই প্রাণ হারিয়েছেন। এর আগে ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত ফ্রানসেসকা আলবানিস গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধসে পড়ার বিষয়টি বড় ধরনের 'বিপর্যয়' হিসেবে উল্লেখ করেন।
এদিকে, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র অন্তত ৮৯ জন কর্মী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। জাতিসংঘ মিশন এক্স সোশ্যাল নেটওয়ার্কে বলেছে, এক মাসে গাজা উপত্যকায় ৮৯ ইউএনআরডব্লিউএ’র সহকর্মী নিহত হয়েছে এবং কমপক্ষে ২৬ জন আহত হয়েছে। আমাদের ব্যাপকহারে সহকর্মীদের হারিয়েছি। এদেরকে ভুলে যাবো না।
এমএন
