তফসিল স্থগিত চেয়ে করা রিট হাইকোর্টে খারিজ


আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।সোমবার (১১ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন।
আজ আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন,অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে আদেশের জন্য রোববার (১০ ডিসেম্বর) দিন ধার্য ছিল হাইকোর্টে। তবে ধার্য দিনে আদেশ না দিয়ে আজকের দিন নির্ধারণ করেন আদালত। যা আজ খারিজ করে দেয়া হলো।
গতকাল আদালত বলেন, ওইদিন চাইলে রাষ্ট্রপক্ষ আরও শুনানি করতে পারবেন। আর তফসিল পেছানো সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো বক্তব্য বা যুক্তি থাকলে রিটকারী আইনজীবীকে সেটি লিখিতভাবে জমা দিতে বলা হয়।
আদালতে এদিন শুনানিতে ছিলেন-রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী এবং তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম। অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ আর রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. ইউনুস আলী আকন্দ।
এ সংক্রান্ত রিটের ওপর ৩ ডিসেম্বর প্রথম দিনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দিন রেখেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার দ্বিতীয় দিনের শুনানি হয়।
ওই শুনানিতে রিটকারী আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারা তুলে ধরে বলেন, নির্বাচনকালীন মন্ত্রিপরিষদ ছোট না করে ভোটের আয়োজন করা ঠিক হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রীবর্গ ও সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ না করে নির্বাচন করছেন। এজন্য জাতীয় নির্বাচনের তফসিল স্থগিত বা পেছানোর নির্দেশনা চাওয়া হয়।
এদিকে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে রিট শুনানির নামে সময় নষ্ট করার জন্য রিটকারী আইনজীবীকে জারিমানার আর্জি জানানো হয়। নির্বাচন কমিশনের আইনজীবীও রিটের বিরোধিতা করে রিট খারিজের আর্জি জানান। এরপর আদেশের জন্য ১০ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেন আদালত। যা আজ আদেশ দিতে পারেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত: ভোটগ্রহণের ৫২ দিন আগে গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তফসিল অনুযায়ী ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৭ জানুয়ারি।
একাদশ জাতীয় সংসদ বহাল অবস্থায় আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের ভোটগ্রহণের দিন ঠিক করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এ তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট করা হয়েছে। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন পেছানোর সুযোগ রয়েছে।
আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব, সংসদ সচিব এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) রিটে বিবাদী করা হয়।
এর আগে গত ২৮ নভেম্বর রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে হাইকোর্টে রিট আবেদনের কথা বলা হয়েছিল। সে ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টে এ রিট করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী-
আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল ৩০ নভেম্বর। যাচাই বাছাই শেষে আপিল আবেদন শেষ হয়। এখন ইসিতে এখন চলছে আপিল শুনানি
এমএন
