ঢাকা শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

Motobad news

আমতলীতে আশ্রয়নের বাসিন্দারদের মানবেতর জীবনযাপন

আমতলীতে আশ্রয়নের বাসিন্দারদের মানবেতর জীবনযাপন
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরগুনার আমতলীর পূর্ব কৃষ্ণনগর গ্রামে  ২০০৩ সালে সরকারী খাস জমির ওপর নির্মাণ করা হয়েছে (জাপানী ব্যারাক) আশ্রয়নের ৭০টি ঘর। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ব্যারাকগুলোতে বসবাসরত ৩৩টি পরিবার। এদের মধ্যে রয়েছেন নারী, শিশু ও বৃদ্ধরাও।

জানা গেছে, উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের পূর্ব কৃষ্ণনগর গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের বাইরে সুবন্দি নদীর তীরে সরকারি খাসজমিতে ২০০৩ সালে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত হয় পূর্ব কৃষ্ণনগর আশ্রয়নের  ঘরগুলো। 

প্রকল্পে কবরস্থান, খেলার মাঠে, সমবায় সমিতির কার্যালয়সহ ৭০টি পরিবারের জন্য সাতটি ব্যারাক রয়েছে। প্রতিটি ব্যারাকে রয়েছে ১০টি করে কক্ষ। জমিসহ প্রতিটি ভূমিহীন পরিবারকে একটি করে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এছাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পে ১০টি পরিবারের জন্য রয়েছে চারটি শৌচাগার ও দুটি গোসলখানা। প্রত্যেক ব্যারাকে একটি করে গভীর নলকূপও বসানো হয়। 

সরেজমিনে দেখা যায়, আশ্রয়ন প্রকল্পর ব্যারাকগুলো সুবন্দি নদীর তীরবর্তী হওয়ায় এবং বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় ব্যারাকগুলো। এ সময়  এখানে  বসবাসরতরা পার্শ্ববর্তী পানি উন্নয়ন বোর্ডের  উঁচু বেড়িবাঁধের ওপর পরিবারের নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে আশ্রয় নেন।  

বসবাসরতরা জানান, নির্মাণের দীর্ঘ সময় পার হলেও আজ পর্যন্ত সংস্কার হয়নি ব্যারাকগুলো। অধিকাংশ ঘরই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ঘরের টিনে মরিচা পড়ে ছিদ্র হয়ে গেছে।

ছিদ্রগুলো বন্ধ করতে ব্যারাকের টিনের চালে পলিথিন বিছিয়ে তার ওপর ইটচাপা দিয়ে রাখা হয়েছে। দরজা, জানালাগুলোতে মরিচা পড়ে ভেঙে গেছে গ্রিল। টিওবয়েলগুলো নষ্ট। শৌচাগার ও গোসলখানার ভেঙ্গেগেছে। ব্যবহারের অনুপযোগী।

বর্তমানে সাতটি ব্যারাকের ৭০টি কক্ষ। এর মধ্যে জোড়াতালি দিয়ে ৩৩টি  পরিবারের প্রায় ২ শতাধিক অসহায় দুস্থ সহায় সম্বলহীন মানুষ বসবাস করছেবাকি ঘরগুলো একেবারে ভেঙে এখন পরিত্যক্ত।

আশ্রয়নে বসবাসরত হামিদা  বেগম জানান, ঘরের মধ্যে থাকতে পারেন না তাঁরা। বৃষ্টি এলে টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে। চাল দিয়ে পানি পড়া ঠেকাতে হাঁড়ি, পাতিল পেতেও কোনো লাভ হয় না। 

বাসিন্দা খোকন মিয়া জানান, সরকার ভূমিহীনদের পুনর্বাসন করতে এ আশ্রয়ন প্রকল্পের ব্যারাক নির্মাণ করে দিয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের এই ব্যরাকগুলোর কোনো সংস্কার না করায় ঘরগুলো এখন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্ষায় ঘরের ভেতর পানি পড়ে, শীতে অনেক ঠান্ডা লাগে। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলাম বলেন, আশ্রয়নের বাসিন্দারা অসহায়ভাবে জীবনযাপন করছেন। ব্যারাকগুলো জরুরিভাবে মেরামত করা দরকার।

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহমেদ মাসুম তালুকদার বলেন, নির্মাণের দীর্ঘদিন পার হলেও সংস্কার না করায় এখন এ ব্যারাকগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জরুরী ভিত্তিত্বে ব্যারাকগুলো সংস্কারের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি তারেক হাসান  মুঠোফোনে বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্পটি পরিদর্শন করে ব্যারাকের যেসব সমস্যা আছে তা সমাধান ও ভাঙা জরাজীর্ণ ঘরের একটি তালিকা তৈরি করে খুব শিগগির তা সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন