ঢাকা সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

Motobad news

বরিশালে বিএনপি নেতার কালভার্ট নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিল বিসিসি

বরিশালে বিএনপি নেতার কালভার্ট নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিল বিসিসি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

এক ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে বরিশাল সিটি করপোরেশনের অনুমতি না নিয়ে কালভার্ট নিমার্ণের অভিযোগ উঠেছে। যদিও বিএনপি নেতা নুরেু আলম হাওলাদার দাবী করেছেন, সবার উদ্যোগে কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। 

তবে অভিযোগ রয়েছে এ কাজের জন্য তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছে। সবশেষ গতকাল শুক্রবার সকালে কালভার্ট নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে সিটি করপোরেশন। 

২৫ নম্বর ওয়ার্ডের উচ্ছেদ শাখার পরিদর্শক (আরআই) মো. সালাউদ্দিন জানান, সিটি করপোরেশনের নিবার্হী প্রকৌশলী ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল শাখার দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল মোতালেব হাওলাদার (স্যার) সরেজমিনে গিয়ে অনুমতি ছাড়া কালভার্ট নির্মাণের সত্যতা পান। পরে তার নির্দেশে বিকেলে উচ্ছেদ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস, মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, ইমরান হাসান রাজিব, সাজ্জাদ হোসেন পরির্দশনে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি নগরের রূপাতলী গ্রামীণ জিসি চক্ষু হাসপাতালের পশ্চিম পার্শ্বে আরএন হাউজিং এলাকার বাসিন্দারদের চলাচলের জন্য কালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেয় ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সচিব নূরে আলম হাওলাদার। কিন্তু সিটি করপোরেশনের অনুমতি না নিয়ে তিনি ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে হাউজিংয়ের প্লট মালিক ও একাধিক বাসিন্দার কাছ থেকে কালভার্ট নির্মাণের জন্য তাদের জমির শতক প্রতি ৫ হাজার টাকা করে নেয়। অর্থাৎ যে ব্যক্তির ৮ শতক জমির মালিক তার কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। এভাবে প্রায় ৯ লাখ টাকা উত্তোলন করেছে নুরেু আলম হাওলাদার। 

তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালভার্টটির চওড়া আনুমানিক ৪ ফুট এবং লম্বা ৯ মিটার হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিটি করপোরেশনের এক ঠিকাদার  জানান, কালভার্টটির নির্মাণে সর্বোচ্চ ব্যয় হতে পারে ২ লাখ টাকা। 

আর এন হাউজিংয়ের প্লট মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীন বলেন, তিনি ২০১৫ সালে আর এন হাউজিংয়ের প্লট কিনেছেন। বর্তমানে সেখানে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। চলাচলের  রাস্তার  জন্য অন্য সবার মতো আমিও স্থানীয় নুরেু আলমের কাছে টাকা দিয়েছে। তবে কত টাকা দিছেন তা বলতে অপ্রগতা প্রকাশ করে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জানি এটি সিটি করপোরেশনের কাজ। তারপরেও নুরেু আলম কাজ করার উদ্যোগ নেয়ায় সবাই তার কাছেই টাকা দিয়েছি। 

আরেক বাসিন্দা মুয়াজ্জাম সাংবাদিকদের কাছে টাকা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও তিনি প্রকৃত ঘটনার বিষয়টি খুজেঁ বের করার অনুরোধ জানান। 

নাম  শর্তে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরই বিএনপির দাপট দেখিয়ে নুরেু আলম এলাকার অধিকাংশই ব্যক্তির পুকুর, জমি দখল করেছে। তবে তারা প্রকাশ্য মুখ খুলতে সাহষ পায় না। বিষয়টি তদন্ত হলে প্রমানিত হবে বলেন তারা। 

এ প্রসঙ্গে নূরে আমল বলেন, ব্রিজটি এলাকার সবাই মিলে টাকা দিয়ে যৌথভাবেই নির্মাণ করছে। আমি শুধুমাত্র সবার হয়ে কাজটি বাস্তবায়ন করছি। তাছাড়া ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি। অনুমোদন পাওয়ার আগেই কাজ শুরু করেছিলাম। এটাই হলো আমাদের অপরাধ। এ কারণে সিটি করপোরেশনের লোকজন এসে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন করপোরেশনের অনুমতি পেলে পরবর্তিতে কাজ এগিয়ে নিবো।

এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের নিবার্হী প্রকৌশলী ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাখার দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, সিটি করপোরেশনের অনুমতি না নিয়ে কালভার্ট নির্মাণ করার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পেয়ে উচ্ছেদ শাখাকে ব্যবস্থা নিতে বললে তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
 
এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক  মিটিং এ ব্যস্ত থাকায় বক্তব্য দিতে পারেন নি। তবে সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার জিয়া জানান, ব্যক্তির দায় দল নিবে না। এ ধরণের কিছু হলে অবশ্যই তদন্ত পূর্বক সত্যতা পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন