টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ‘শিগগিরই’


যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার সরকারের সিটি মিনিস্টার ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে চলমান একটি তদন্তের প্রতিবেদন ‘শিগগিরই’ সামনে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে এ খবর দেয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্নীতি মোকাবেলার দায়িত্বে থাকা টিউলিপের ওপর পদত্যাগের ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) এমনটাই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের মুখপাত্র ডেভ প্যারেস।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টিউলিপ সিদ্দিকের দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। অভিযোগের মধ্যে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লন্ডনে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট নেয়ার বিষয়টি রয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশের ৯টি মেগা প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে টিউলিপ, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। সংস্থাটি টিউলিপের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কেও তথ্য চেয়েছে।
যদিও টিউলিপ ফ্ল্যাট নিয়ে তথ্য লুকানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে চলতি মাসের শুরুর দিকে তিনি এসব বিষয়ে সরকারি তদন্তের আহ্বান জানান। তদন্তকারী সংস্থা মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডসকে একটি চিঠিও লেখেন তিনি।
চিঠিতে নিজেকে ‘নির্দোষ’ দাবি করে তিনি বলেন যে, ‘স্পষ্ট করে বলছি যে আমি ভুল কিছু করিনি।’ এরপর প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন যে, টিউলিপের ওপর তার আস্থা আছে এবং নিজের ব্যাপারে তদন্ত চেয়ে টিউলিপ সঠিক কাজটি করেছেন।
এরপর তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডসের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের মুখপাত্র জানান, শিগগিরই এই তদন্তের প্রতিবেদন সামনে আসবে।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘লরি ম্যাগনাস এ নিয়ে খুব দ্রুততার সাথে কাজ করছেন। আপনারা খুব শিগগিরই হালনাগাদ তথ্য পাবেন।’ এ বিষয়ে বিস্তারিত না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যখন আমরা এ ব্যাপারে আপডেট তথ্য পাব, তখন আমরা জানাতে পারব।’
এদিকে টিউলিপের দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে। সবশেষ তার বিরুদ্ধে আইসিসি ও বিশ্বকাপের ইভেন্টেও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ সোমবার জানায়, ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের সময় ৫ জুন বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে কোনো টিকিট ছাড়াই হসপিটালিটি বক্সে বসে খেলা দেখেছেন টিউলিপ। সঙ্গে ছিলেন ভাই-বোন ও আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ।
এসব অভিযোগের মুখে টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি। তারা বলেছে, টিউলিপের ওপর ব্রিটেনের দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারই নাম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছে। এতে তিনি মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পালনের নৈতিকতা হারিয়েছেন।
এছাড়া বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস টিউলিপকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো সত্য হলে তার ক্ষমা চাওয়া উচিত।
