ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

‌‌ইন্দো-নেপাল সীমান্ত বন্ধ করেছে ভারত

‌‌ইন্দো-নেপাল সীমান্ত বন্ধ করেছে ভারত
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

‌‌ইন্দো-নেপাল সীমান্ত বন্ধ করেছে ভারত। জেন জি আন্দোলনের আঁচ যেন নেপাল পেরিয়ে ভারতে না আসে সেজন্য পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের পানিট্যাঙ্কি ইন্দো-নেপাল সীমান্ত দিয়ে অস্থায়ীভাবে যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে এবং কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে। ওই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার একাধিক পদক্ষেপ গ্ৰহন করেছে।

বিশেষ করে জেন জি আন্দোলনের প্রভাব এড়াতে এবং সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে। ফলে দার্জিলিংয়ের ইন্দো-নেপাল পানিট্যাঙ্কি সীমান্ত দিয়ে আপাতত যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।


সতর্কতা জারি করার পর ইন্দো-নেপাল পানিট্যাঙ্কি সীমান্ত পরিদর্শনে যান পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গের আইজি রাজেশ কুমার যাদব, ডিআইজি সিমা সুরক্ষা বল (এসএসবি)মনোজিত সিং এবং পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ।


বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই কড়াকড়ি আরও বাড়ানো হয়েছে। সাধারণ মানুষদের জন্য এই মুহূর্তে পরিচয়পত্র পরীক্ষা ছাড়া সীমান্ত পারাপার কার্যত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিলিগুড়ি-নেপাল সরকারি বাস পরিষেবাও বন্ধ রাখা হয়েছে। ভারতের প্রায় শতাধিক ট্রাকচালক এখন ইন্দো-নেপাল পানিট্যাঙ্কি সীমান্তে আটকে আছে।

দার্জিলিংয়ের ইন্দো-নেপাল পানিট্যাঙ্কি সীমান্ত অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে সীমা সুরক্ষা বল (এসএসবি) সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) এবং এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রেপিড অ্যাকশন ফোর্স।নামানো হয়েছে ডগ স্কোয়াড। সীমান্তে দাঁড়িয়ে থাকা সব গাড়ি পরীক্ষা করছে ডগ স্কোয়াড। প্রতিটি গাড়ির চালকের নাম, যাত্রীর নামসহ অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ।

পশ্চিমবঙ্গের ইন্দো-নেপাল সীমান্তে সব ধরনের আন্দোলন এবং মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নেপালের পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে পানিট্যাঙ্কি ইন্দো-নেপাল সীমান্ত নিরাপত্তা নজরদারি আরও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।আটকে থাকা ভারতীয়দের জন্য ২৪ ঘন্টার কন্ট্রোল রুম চালু করেছে দার্জিলিং জেলা পুলিশ।

দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ বলেন, আমরা সীমান্তে নাকা তল্লাশি শুরু করেছি। এপারে যদিও অশান্তির কোনো খবর নেই। তবে আমরা সতর্ক আছি। নেপাল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। এসএসবি কর্মকর্তারাও সতর্ক রয়েছে। নেপালে কোনো ভারতীয় সমস্যায় পড়লে দার্জিলিং জেলা পুলিশের হেল্পলাইনে ফোন করলে আমরা যথাসম্ভব সাহায্য করবো।

নেপালের পরিস্থিতি দেখে গণেশ বাহাদুর নামের এক নেপালি বাসিন্দা পশ্চিমবঙ্গ থেকে নেপালে ফিরে যাচ্ছেন।তার পরিবারের সদস্যরা নেপালে আছেন। গনেশ বাহাদুর বলেন, এখন কি করবো নেপালের পরিস্থিতি এমন হয়েছে। আমাদের তো যেভাবে খুশি যাওয়া আসা হতেই থাকে। নেপালে আমার পরিবারের সদস্যরা রয়েছে। তাই এই মুহূর্তে আমাকে নেপালে যেতেই হচ্ছে।

গনেশ বাহাদুর আরও বলেন, নেপালের এই পরিস্থিতিতে একটু ভয়ও পাচ্ছি কারণ পরিবারের সবাই ওখানে রয়েছে। তাই এখন ফের নেপালের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি। চিন্তা হচ্ছে।


পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের ইন্দো-নেপাল পানিট্যাঙ্কি ও উত্তরপ্রদেশের সনৌলি মহারাজাগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে এরই মধ্যে ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে সীমা সুরক্ষা বল (এসএসবি)। কেউ কেউ পর্যটক হিসেবে, কেউ ভগবান পশুপতি নাথ দর্শনের জন্য আবার কেউ ব্যবসায়িক কাজে নেপালে গিয়ে অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে আটকে পড়েছেন।

ভারতীয় নাগরিকদের পরিচয়পত্র যাচাই করে তবেই দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে সীমা সুরক্ষা বলের সদস্যরা। আর যে সব নেপালি নাগরিক ভারতে ছিলেন তাদের জরুরি পরিস্থিতিতে চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজেই নেপালে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।


আন্দোলনে উত্তাল প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি এরই পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেছেন। নেপালের কৃষিমন্ত্রী, আইন মন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও পদত্যাগ করেছেন। নেপালের উত্তেজিত জনতা বিভিন্ন মন্ত্রী এবং রাজনৈতিক নেতার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন