মন্ত্রীদের হেলিকপ্টারের দড়িতে ঝুলে পালানোর ভিডিও ভাইরাল


বিক্ষোভে উত্তাল নেপালে সহিংসতার শিকার হচ্ছেন রাজনীতিবিদ এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। উন্মত্ত জনতা থেকে বাঁচতে তাদের আপ্রাণ চেষ্টার একাধিক ফুটেজ এবং ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তেমনই এক ভিডিওতে দেখা যায়, নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার আশায় সেনা হেলিকপ্টারের রেসকিউ স্লিং (উদ্ধারের জন্য ব্যবহৃত ঝুলন্ত দড়ি) ধরে ঝুলছেন মন্ত্রী ও তাদের স্বজনরা।
ভুয়া খবর প্রতিরোধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারির সঙ্গে সঙ্গেই দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চলমান আন্দোলন সহিংস আকার ধারণ করে। বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়া সংঘর্ষে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হলে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। সরকার পিছু হটা শুরু করলেও কিছুতেই থামানো যাচ্ছিল না বিক্ষোভকারীদের। একাধিক স্থান থেকে আসছিল ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার খবর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামে সেনাবাহিনী। রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনির্দিষ্টকাল এবং দেশব্যাপী শুক্রবার পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার কয়েক হাজার ‘জেন-জি’ বিক্ষোভকারী একত্র হয়ে একাধিক সরকারি কর্মকর্তার বাড়ি ভাঙচুর করে এবং সংসদ ভবনে আগুন দেয়। তারা যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুঙের বাড়িতে আগুন দেয়, উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাউডেলের বাড়িতে পাথর নিক্ষেপ করে, নেপাল রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বিষ্ণু পাউডেল এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকের বাড়িতে হামলা চালায়।
এক ভিডিওতে দেখা যায়, অর্থমন্ত্রীকে রাস্তায় তাড়া করে মারধর করছে বিক্ষোভকারীরা। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরজু রানা দেউবা ও তার স্বামী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নেপালি কংগ্রেস প্রধান শেরবাহাদুর দেউবার কাঠমান্ডুর বাসভবনে হামলা করা হয়।
সেনাবাহিনী হেলিকপ্টারে করে কয়েকজন মন্ত্রী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়। এক ভিডিওতে দেখা যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় শেরবাহাদুর দেউবা মাঠে অসহায়ভাবে বসে আছেন, পরে কর্তৃপক্ষ এসে তাকে উদ্ধার করে। অন্য এক ভিডিওতে দেখা যায়, হেলিকপ্টারের ঝুলন্ত ঝুড়িতে কর্মকর্তাদের নিয়ে কাঠমান্ডুর একটি হোটেলের ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে, পাশে ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলী উঠছে।
অরাজকতার সুযোগ নিতে দেখা গেছে কারাবন্দীদেরও। তারা জেলের বিভিন্ন কক্ষ ও প্রহরীদের ঘরে আগুন লাগায় এবং প্রধান ফটক ভেঙে রাস্তায় বেরিয়ে আসে। সেনাবাহিনী অবশ্য তাদের পালানোর চেষ্টা ঠেকিয়ে দিয়ে বন্দিদের বিভিন্ন কারাগারে স্থানান্তর করেছে।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি
