যাত্রী সংকটে বন্ধ হয়ে গেলো বরগুনা-ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল


এবার যাত্রী সংকটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা হলো ঢাকা-বরগুনা রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ। আজ মঙ্গলবার এ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এর ফলে মঙ্গলবার সারাদিনে বরগুনা থেকে যাত্রীবাহী কোন লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি। এমনকি ঢাকা থেকেও কোন লঞ্চ বরগুনায় পৌঁছেনি।
বরগুনা লঞ্চঘাটে নোঙর করা ঢাকা-বরগুনা রুটের এম কে শিপিং লাইন্সের ম্যানেজার এনায়েত হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ বরগুনা থেকে ঢাকা রুটের লঞ্চে যাত্রী কমে গেছে। যে সংখ্যক যাত্রী হচ্ছে, তাতে লঞ্চের জ্বালানি খরচ ওঠে না। তাই মঙ্গলবার থেকে এ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এর আগে পদ্মা সেতু চালুর পরে যাত্রী সংকটে পড়ে ঢাকা-চাঁদপুর-বরিশাল-কাউখালী-ঝালকাঠি রুটের নৌযান। আর তাই চলতি বছরের গত জুলাই মাসের শুরুতে দূরপাল্লার এই রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জানা গেছে, একসময় ঢাকা-বরগুনা রুটে পূবালী-১, রাজহংস-৮ ও শাহরুখ-২ সহ মোট ৮টি লঞ্চ চলাচল করতো। তবে পদ্মা সেতু চালুর পরে একে একে লঞ্চের সংখ্যা কমতে থাকে। গত ঈদের ঈদ-উল-আযহার পরে দুদিন পর্যন্ত দুটি করে লঞ্চ চলাচল করে এই রুটে। এরপর যাত্রী না থাকায় ঢাকা থেকে একটি এবং বরগুনা থেকে একটি লঞ্চ চলাচল করছিল। সবশেষ যাত্রী সংকটের কারণে সেই একটি লঞ্চও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
নতুন করে ঢাকা-বরগুনা দূরপাল্লার রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণায় এ রুটের যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তাদের মতে লঞ্চে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি কম ভাড়ায় পণ্য পরিবহন করা হতো। লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন বিকল্প মাধ্যমে পণ্য পরিবহন করতে হবে ব্যবসায়ীদের। এতে বহন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বরগুনা বাজারের ব্যবসায়ী মো. সিরাজ উদ্দিন বলেন, ঢাকা থেকে আমরা নিয়মিত লঞ্চে পণ্য পরিবহন করে থাকি। লঞ্চে পণ্য পরিবহন যেমন নিরাপদ ঠিক তেমনি ভাড়াও কম। লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের বিকল্প পদ্ধতিতে পণ্য পরিবহন করতে হবে। এতে পরিবহনব্যয় বৃদ্ধি পাবে।
বরগুনা জেলা যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সঞ্জীব দাস বলেন, ‘বরগুনার ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে লঞ্চ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শুধু কম ভাড়াই নয়, লঞ্চ ভ্রমণ একটি আনন্দদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণও। লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘোষণায় আমরা ব্যথিত। বিষয়টি নিয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসব।
তবে লঞ্চ মালিকরা জানিয়েছেন, ‘সড়কপথে মাত্র ছয় ঘণ্টায় বরগুনা থেকে ঢাকা পৌঁছানো যায়। কিন্তু লঞ্চে সময় লাগে বেশি। এ কারণে লঞ্চগুলো যাত্রী সংকটে ভুগছে। এখন নিরুপায় হয়ে লাগাতার লোকসান এড়াতে লঞ্চ বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
আরজেএন
