বানারীপাড়ায় প্রবাসী স্বামীসহ চারজনের বিরুদ্ধে স্ত্রীর যৌতুক মামলা

বানারীপাড়ায় প্রবাসী স্বামী এবং শ্বশুর-শাশুরীর বিরুদ্ধে ৫ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য ইভা আক্তার নামের গৃহবধূকে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে স্বামী, শ্বশুর-শাশুরীসহ চারজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ইভা আক্তার বাদী হয়ে শুক্রবার বানারীপাড়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- গৃহবধূর স্বামী উপজেলার বাঘরা গ্রামের বাসিন্দা এবং সিঙ্গাপুর প্রবাসী সবুজ বেপারী, শ্বশুর আব্দুর রহমান বেপারী, শাশুরী আকলিমা বেগম ও জাঁ ফাতেমা বেগম। মামলা এবং পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ‘এক বছর পূর্বে উপজেলার চাখার ইউনিয়নের বাঘরা গ্রামের ব্যবসায়ী আঃ রব বেপারীর মেয়ে ও চাখার সরকারি ফজলুল হক কলেজের এইচ.এস.সি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ইভা আক্তারের সঙ্গে একই এলাকার সবুজ বেপারীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ সম্পর্কের সুবাধে তারা পালিয়ে গিয়ে নোটারী পাবলীকের মাধ্যমে বিয়ে করেণ। ওই সময় প্রথমে ইভার পরিবার এ বিয়ে মেনে না নিলেও পরে তারা মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে সবুজকে জামাতা হিসেবে মেনে নিয়ে পারিবারিকভাবে স্থানীয় কাজী অফিসে গিয়ে শরীয়া মোতাবেক বিবাহ সম্পন্ন করে। তবে তার পূর্বে দাবি অনুযায়ী জামাতাকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য দুই লাখ টাকা যৌতুক দেয় ইভার পরিবার। এদিকে, বিয়ের পরে সিঙ্গাপুর চলে যায় সবুজ। কিন্তু প্রবাসে গিয়ে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলেও স্ত্রীর খোঁজ-খবর নেয়া বন্ধ করে দেন তিনি।
সবশেষ গত এক মাস পূর্বে সিঙ্গাপুর থেকে বাড়ি ফিরে আসে সবুজ। এসে স্ত্রীকে জানায় তার কাছে কোন টাকায় নেই। এর কয়েকদিন পরে গত ২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে সবুজ তার শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য স্ত্রী ইভাকে তার বাবার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে। তার এই দাবির প্রতি অসম্মতি জানায় ইভা। এতে তার ওপর ক্ষিপ্ত হয় স্বামী সবুজ। এমনকি শ্বশুর-শাশুরীর সামনেই তাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করেন তিনি। এতে ইভা আহত হলে তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। এই ঘটনায় বিচার চেয়ে ইভার পরিবার চাখার ইউনিয়ন পরিষদে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ নিস্পত্তির জন্য ইউপি চেয়ারম্য সৈয়দ মজিবুল ইসলাম টুকু পরিষদে উভয় পক্ষ নিয়ে একাধিক বৈঠক করেন। কিন্তু সেখানে কোন সুফল না পেয়ে গৃহবধূ ইভা বানারীপাড়া থানায় স্বামী, শ্বশুর-শাশুরীসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
বানারীপাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাফর আহম্মেদ বলেন, ‘গৃহবধূর অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এসআই স্বপন চন্দ্র দে কে। তাকে তদন্ত পূর্বক এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে জানিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা স্বপন চন্দ্র বলেন, ‘আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না।
এইচেকআর