আমতলীতে বুড়িশ্বর নদীর ভাঙ্গনে গরুর হাট ধ্বংসের পথে!


বরগুনার আমতলী প্রমত্তা পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীর অব্যাহত ভাঙ্গন এবং গরুর বাজার সংলগ্ন স্লুইজগেটের পানি প্রবাহের সম্মুখে থামছে না ভাঙ্গন। অব্যাহত ভাঙ্গনে পৌরসভার বাসুগি এলাকার গরুর হাটের ব্লক ধ্বসে হুমকির মুখে পড়েছে উপজেলার সবচেয়ে বড় গরুর হাটটি। হাট রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে যে কোনো মুহূর্তে পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীতে হারিয়ে যেতে পারে হাটের একাংশ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২-৭৩ সালে আমতলী উপজেলার ৪৩/১ নম্বর পোল্ডারের পৌরসভার ৫ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝখান দিয়ে ৫০০ মিটার খাল খনন করে। এরপর ওই খালের পশ্চিম অংশে পায়রা নদী সংলগ্ন স্থানে দুই কপাটের একটি স্লুইজগেট নির্মাণ করা হয়। ওই স্লুইজের মাধ্যমে উপজেলার চাওড়া, লোছা, লোদা, নাচনাপাড়াসহ আমতলী সদর, চাওড়া ও হলদিয়ার ইউনিয়নের বিভিন্ন খালের পানি পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীতে প্রবাহিত হয়। ছোট একটি স্লুইজগেট দিয়ে বিপুল পরিমাণ পানি প্রবাহের সময় স্লুইজের সম্মুখভাগে পচন্ড স্রোত ও ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়ে খালের পার ভাঙ্গন দেখা দেয়। ওই খালের দক্ষিণ পাশেই আমতলী পৌরসভার গরু হাটটির অবস্থান। গত বছর ওই গরুর হাটের পশ্চিম অংশে পায়রার (বুড়িশ্বর) নদীর তীর ঘেঁষে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় ব্লক ফেলে ভাঙ্গন রোধ করেন আমতলী পৌরসভা। হাটের দক্ষিণ অংশের প্রায় ৫ থেকে ৬’শ মিটার এলাকাজুড়ে দেখা দিয়েছে ব্যাপক ভাঙ্গন। এছাড়া স্লুইজগেট এলাকায় হাটের উত্তর পাশে খাল অরক্ষিত থাকায় এবং ভাঙ্গনের তীব্রতা থাকায় ওই অংশটি যে কোনো মুহূর্তে পায়রায় বিলীন হয়ে যেতে পারে।
স্থাণীয় বালু ব্যবসায়ীরা স্লুইজের খালের পাড় ব্যক্তিগত উদ্যোগে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে বাঁশ ও চাটাই দিয়ে ভাঙ্গন রোধ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। বালু ব্যবসায়ীরা জানায়। গরুর পাইকারি ব্যবসায়ী লোচার গ্রামের শাহিন ব্যাপারী বলেন, ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে গরুর হাটটি পায়রা নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হাটের ইজারাদার ও আমতলী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় গরুর হাট আমতলী। পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীর ভাঙ্গন থেকে এই হাট রক্ষায় জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
আমতলী পৌর মেয়র মো. মতিয়ার রহমান মুঠোফোনে বলেন, পৌরসভার গরুর হাটটি রক্ষায় পৌরসভার অংশের ভাঙ্গন রোধে নদীর পাড়ে ব্লক ফেলা হয়েছে। এখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অংশে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। তাদের উচিত জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার আলম মুঠোফোনে বলেন, স্লুইজগেট এলাকায় খালের ভাঙ্গন রোধে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরী করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া মাত্র সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।
এইচকেআর
