ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

Motobad news

উপকূল থেকে দিন দিন কমে যাচ্ছে প্রকৃতিবান্ধব ছৈলা গাছ

উপকূল থেকে দিন দিন কমে যাচ্ছে প্রকৃতিবান্ধব ছৈলা গাছ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরগুনার আমতলীসহ উপকূলীয় এলাকায় ছৈলা একটি লবন সহিষ্ণু বন্য প্রজাতির বৃক্ষ ছৈলা গাছ দিন দিন কমে যাচ্ছে । ১০ বছর পূর্বেও আমতলী উপজেলার হলদিয়া , চাওড়া ,গুলিশাখালী,  আঠারগাছিয়া, কুকুয়া, আমতলী সদর,  আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের নদী তীরে জন্মানো চরে  এলাকার পর এলাকা  ছৈলাগাছে ছিল বিস্তৃত। চরদখল ও চরে ঘরবাড়ী নির্মান চওে কৃষি উৎপাদনের কারনে প্রকৃতিগত ভাবে জন্মানো ছৈলা গাছ দিনদিন কমে যাচ্ছে।

উপকূলীয় নদী তীরবর্তী চর, জোয়ার ভাটার প্রবাহমান খালের চর ও প্লাবনভূমি জুড়ে প্রকৃতিগতভাবে জন্মে। ছৈলা গাছের শেকড় মাটির অনেক গভীর অবধি যায় তাই সহসা ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে কিংবা উপড়ে পড়েনা। ফলে উপকূলীয় এলাকায় প্রকৃতিবান্ধব গাছ হিসেবে ছৈলা বনবিভাগের সংরক্ষিত বৃক্ষ।

কেবল কাঠের মূল্য বিবেচনায় নয়: মাটির সুদৃঢ় গঠনে পর্যায়ক্রমিক একটি দরকারি বৃক্ষ প্রজাতি হিসেবে ছৈলাকে বিবেচনা করা হয়। তাই দূর্যোগ প্রবণ উপকূলে প্রকৃতিবান্ধব ।  
নয়নাভিরাম ছৈলা ফুল

ছৈলাগাছের  ফুল নয়ণাভিরাম ফুল। গাছে ছৈলা ফলও ধরে  থরে থরে। তাই নদী তীরের ছৈলা বনেঅপরূপ নিসর্গের  মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে। ছৈলা ফুলের কলি বেশ শক্ত ও মোটা। আর ফোঁটা ফুলে পাঁপড়ির বদলে ধরে ব্রাশের মত অগণিত লোমশ কলি। সাদা আর গোলাপীর আবহে ফুটে থাকে কেশ গুচ্ছের মতো। আর ফুলের মাঝখান দিয়ে বেশ বড় কেশর দন্ড ফুলের বাইরে দৃশ্যমান। মধূপায়ী পাখিরা আকৃষ্ট হয়ে ফুলের ওপর নাচে। তখন অপূর্ব লাগে ছৈলা বনের এ নিসর্গ। ছৈলা ফল দেখতে অনেকটা কেওড়ার মতোন। কেওড়া আকারে ছোট ছৈলা আকারে বড়। তবে দুটো বৃক্ষই একই গোত্রের।

ছৈলার ফুল ও  ফল :ছৈলা ফল টক স্বাদের। যা নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ খায়। ছৈলা ফলে আবার জেলিও তৈরী হয়। ছৈলা ফুল সারারাত ভিজিয়ে অনেকে সুস্বাদু মধুও সংগ্রহ করে। আবার ছৈলা গাছের পাতা বন্যপ্রাণীর আহার। ছৈলা ফল বোয়াল মাছের প্রিয় খাদ্য। জোয়ারে জলাবদ্ধ ছৈলা গাছের নিচে বোয়াল মাছ আসে।

ছৈলা গাছ ম্যানগ্রোভ বনের বৈশিষ্ট্য মন্ডিত; তাই শ্বাসমূল হয়। ছৈলা গাছ উপকূলে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস ঠেকায়। মাটির ক্ষয় রোধে কার্যকর ছৈলা বৃক্ষ। প্রকৃতি বান্ধব ছৈলা বনে পাখির অভয়াশ্রম। আর রাতের ছৈলা বনে জোনাকি পোঁকারা দলবেঁধে আলো ছড়ায়।

তাই এমন প্রকৃতি বান্ধব ছৈলা বৃক্ষকে সংরক্ষণ এবং এর ব্যবহার বৃদ্ধিতে বিভিন্ন পর্যায়ে কার্যক্রম নেয় জরুরী। তবে এই গাছও একশ্রেণীর অসাধু লোকদের হাতে থেকে রক্ষা পায় না। তারা এই গাছ কেটে বাজারে বিক্রি করছে। তাই বন বিভাগ সহ সকলকে উদ্যোগী হবে উপকূলীয় পরিবেশের জন্য সহায়ক এই গাছ টিকিয়ে রাখা এবং এর বিস্তার ঘটানোর জন্য।

এ প্রসঙ্গে আমতলী উপজেলা  বনকর্মকর্তা কেএম ফিরোজ কবির মুঠোফোনে বলেন,  ছৈলা গাছ  পেিবশের জন্য একটি উপকারী গাছ।  অসাধু লোকদের  হাত থেকে ছৈলা গাছ রক্ষার জন্য সকলকে সচেতন হতে হবে। সরকারী জমিতে যে ছৈলা গাছ জন্মে তা সংরক্ষিত গাছ।  সরকারী জমি থেকে এ গাছ কেহ কাটলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন