ঢাকা শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news

কেন্দ্রের মধ্যেই স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণ, টিকাদান কর্মসূচী বন্ধ

কেন্দ্রের মধ্যেই স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণ, টিকাদান কর্মসূচী বন্ধ
ফাইল ছবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এসময় মারধর করা হয় তার গাড়ি চালককে। এর প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে আলমডাঙ্গা উপজেলায় অস্থায়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের টিকাদান কর্মসূচী। টিকাদান কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন টিকা প্রত্যাশীরা। ওই ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ সোমবার জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করবেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) চুয়াডাঙ্গার নেতৃবৃন্দ।


এর আগে রোববার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে টানা ১ ঘণ্টা জরুরি বৈঠক করেছেন জেলার তিন উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) চুয়াডাঙ্গার সভাপতিসহ জেলার ১৭ জন চিকিৎসক। অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন না করলে মানববন্ধনের মাধ্যমে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণার হুঁশিয়ার দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাদি জিয়া উদ্দিন আহমেদ জানান, গত বৃহস্পতিবার সকালে মুন্সিগঞ্জ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রচুর ভিড় হওয়ায় আমাকে বিষয়টি জানান সেখানে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক। কিছুক্ষণ পর ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে যাই। ভিড় উপেক্ষা করে আমি কেন্দ্রে ভেতরে যাই। এসময় আমার গাড়ি চালক নুর আলম টিকা কেন্দ্রে ঢুকতে গেলে সেখানে দায়িত্বরত মুন্সিগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক সালাউদ্দিন ও সহকারী উপ-পরিদর্শক মখলেছুর রহমান তাকে বাধা দেয়। পরিচয় দেয়ার পরও বাকবিতণ্ডা শেষে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা নূর আলমকে চড়-ঘুষি ও মারধর করে। ঘটনাটি আমার সামনে হওয়ায় এগিয়ে গিয়ে পরিচয় দেয়া সত্ত্বেও আমার সাথে খারাপ আচরণ করেন ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা। এক পর্যায়ে আমাকে মারার জন্য রুখে আসে তারা। পরে আমার নাম জিজ্ঞাসা করে খাতায় লিখতে যায়। আমি লজ্জায় অপমানিত হয়ে কেন্দ্র থেকে চলে আসি।

তিনি আরও বলেন, আমার চালকও একজন স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যেই পড়ে। তারা তাকে মারধর করতে পারেন না। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যেই যদি পুলিশ কর্তৃক মারধর ও লাঞ্ছিতের শিকার হতে হয় তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কে দিবে?

তিনি বলেন, আমি ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগসহ জেলা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনকে জানিয়েছি। এছাড়া শনিবার ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছি। ওই ঘটনার পর থেকে আলমডাঙ্গা উপজেলায় অস্থায়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে অনির্দিষ্টকালের জন্য টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শুধু আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকাদান কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। বাকী অস্থায়ী পাঁচটি কেন্দ্রে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে টিকাদান কর্মসূচী।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ'র) চুয়াডাঙ্গা শাখার সভাপতি ডা. মার্টিন হীরক চৌধুরী জানান, ওই ঘটনার বিষয়ে সিভিল সার্জনের সঙ্গে বৈঠক করেছি আমরা জেলার ১৭ জন চিকিৎসক। আগামীকাল সোমবার জেলা প্রশাসকের কাছে যাবো। ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি না হলে আগামী মঙ্গলবার আলমডাঙ্গা উপজেলায় ও সদর হাসপাতাল চত্বরে মানববন্ধনের মাধ্যমে কঠোর কর্মসূচিতে দেয়া হবে।

পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনার দিন বিকেলেই অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে মুন্সিগঞ্জের পুলিশ ক্যাম্প থেকে আলমডাঙ্গা থানায় বদলী করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন