ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

Motobad news

টনপ্রতি ১৫০০ টাকা ঘুষ চাল সরবরাহে অনীহা

টনপ্রতি ১৫০০ টাকা ঘুষ চাল সরবরাহে অনীহা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

চলতি আমন মৌসুমে বরিশাল বিভাগে ২১ হাজার টন সিদ্ধ চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে খাদ্য বিভাগ। তবে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা ঘুষ নিয়েছেন—এই অভিযোগে বরগুনা সদরের মিল মালিকরা এবার চাল সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ হননি। ফলে এখানে চাল সংগ্রহ কার্যক্রমে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

বরগুনা জেলা খাদ্য বিভাগ বলছে, বরগুনা জেলায় এবার দুই হাজার ৪৮৫ টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৪০ টাকা কেজি দরে চালকল মালিকদের কাছ থেকে এসব চাল সংগ্রহ করবে খাদ্য বিভাগ।

খাদ্য বিভাগ জানায়, বরিশাল বিভাগের সব জেলায় চালকল মালিকদের সঙ্গে গত ২৫ নভেম্বর চুক্তি করেছে সংশ্লিষ্ট জেলা খাদ্য বিভাগ। তবে বরগুনা সদরের চালকল মালিকরা চুক্তিবদ্ধ হননি। তাঁদের অভিযোগ, বরগুনা সদর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা টনপ্রতি ঘুষ দাবি করে। বিষয়টি জানিয়ে তাঁরা খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

বরগুনা সদরের চালকল মালিকরা মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন, গত বছর বাজারদর অনুকূলে না থাকা সত্ত্বেও চালকল মালিকরা লাভ ছাড়াই খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করেছেন। বরগুনা সদর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মো. জলিল শিকদার সে সময় টনপ্রতি চালের জন্য দুই হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। আমরা চালকল মিলাররা এসব টাকা দিতে না চাইলে তিনি বিভিন্ন টালবাহানা করেন। চালের মান খারাপ এমন অজুহাতে চাল ফেরত দেন। পরে টনপ্রতি এক হাজার ৫০০ টাকা করে দিয়ে খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করেন মিলাররা। তখন এ কাজ না করলে এসব মিল কালো তালিকাভুক্ত ও জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যেত বলেও অভিযোগ করা হয়।

লিখিত অভিযোগকারী বরগুনা সদরের ভাই ভাই রাইস মিলের মালিক মো. সিদ্দিক বলেন, ‘বরগুনা খাদ্যগুদামের ওসিএলএসডি জলিল শিকদার গত মৌসুমে আমাদের কাছ থেকে টনপ্রতি এক হাজার ৫০০ টাকা ঘুষ নিয়েছেন। ওসিএলএসডি যত দিন সদরের খাদ্যগুদামে থাকবেন তত দিন আমরা কোনো চাল সরবরাহ করব না।’ ফরাজী রাইস মিলের মালিক মনির হোসেন বলেন, ‘গত মৌসুমে আমরা লোকসান দিয়ে চাল সরবরাহ করেছি। তখন ওসিএলএসডি জলিল শিকদারকে টনপ্রতি দেড় হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। সে জন্য আমরা এবার কোনো চুক্তি করিনি।’

তবে বরগুনা সদর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মো. জলিল শিকদার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘গত মৌসুমে চাল সরবরাহের সময় কোনো মিলারের কাছ থেকে কোনো ঘুষ চাওয়া হয়নি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তাঁদের সরবরাহকৃত চালের গুণগত মান ঠিক ছিল না। খারাপ চাল সরবরাহ করে মিল মালিকরা চা খেতে এক হাজার টাকা করে আমাকে দিতে চেয়েছিল, তা আমি নিইনি। পরে আমার স্টাফ জাকিরের কাছে দিয়েছিল। এবার সেই ক্ষোভে তাঁরা এমন মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন।’

বরিশাল আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিজানুর রহমান বলেন, ‘বরগুনার সদরের চালকল মালিকরা একটি অভিযোগ দিয়েছেন সেটি পেয়েছি। অভিযোগটি বরগুনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’

 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন