ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

Motobad news

দক্ষিনাঞ্চল থেকে কমে যাচ্ছে মহিষ

দক্ষিনাঞ্চল থেকে কমে যাচ্ছে মহিষ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

কালের বিবর্তনে কমে গেছে মহিষ পালন। আগের মত এখন আর চোখে পড়ে না মহিষের পাল। কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার, পরিত্যক্ত জমি কমে যাওয়া, সবুজ ঘাসের অভাব উপজেলা  থেকে বিলুপ্তির পথে মহিষ পালন। বরগুনার  উপকুলীয় উপজেলা আমতলী থেকে দিনে দিনে  কমে যাচ্ছে  মহিষ।  ১০ বছর পূর্বেও  প্রায় প্রত্যেকটি কৃষক পরিবারই মহিষ পালন করতে দেখা যেত । মহিষ পালনের জন্য রাখা হত রাখাল। এখন আর আগের মত মহিষের পাল চোখে পড়েনা। এছাড়া এ অঞ্চল থেকে মহিষের চারণভূমি কমে যাওয়ায় সাথে সাথে এর সংখ্যাও কমে গেছে।

এক সময় উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় মহিষ পালনের প্রাচুর্য ছিল। প্রায় প্রত্যেকটি কৃষক পরিবারেরই মহিষ ছিল। বিলে দেখা যেত মহিষের পাল। এক একটি পালে প্রায় ৩০-৪০টি মহিষ দেখা যেত। আর এ মহিষ চারণের জন্য থাকত  রাখাল। রাখালরা মহিষের পাল ছেড়ে সুমধুর গান ধরত। এখন আর গ্রামাঞ্চলে চোখে পড়ে না মহিষের বিচরণ। অনেক কৃষকই মহিষ দিয়ে হাল চাষ করতো। বর্তমানে বেশির ভাগ হাল চাষই হয় আধুনিক যন্ত্র দিয়ে। এছাড়া একসময় অনেক কৃষকই মহিষের দুধ বিক্রি করে সংসারের ভরপোষণ করত। তবে এখন মহিষের সংখ্যা খুবই কম থাকায় হাট-বাজারে মহিষের দুধ নেই বললেই চলে। মহিষের মাংস আমিশের চাহিদা পূরণ করে। আগে বিভিন্ন শহরে মাইকিং করে ঢোল বাজিয়ে মহিষের মাংস বিক্রি হত। এসব চিত্র এখন আর চোখে পড়ে না।

বর্তমানে এই উপজেলায় ৫ হাজার ১৩টি  মহিষ রয়েছে। প্রতিটি মহিষের জন্য প্রতিদিন প্রায় ৩০ কেজি সবুজ ঘাসের প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে মহিষ পালনের বড় বাঁধা  সুবজ ঘাষের অভাব বলে  আমতলী উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্র জানায়।

স্থানীয়  প্রবীন ব্যক্তিরা  বলেন, কৃষকরা মহিষ দিয়ে হাল চাষসহ মহিষের দুধ বিক্রি করত। মহিষের সংখ্যা কমে যাওয়াতে বর্তমানে চাষবাদ করা হয় আধুনিক যন্ত্র দিয়ে। তবে যদি মহিষ পালনে এ অঞ্চলের কৃষকদের সরকারি প্রনোদনা দিয়ে আগ্রহী করা যায় তাহলে এর মাংস দিয়ে আমিষের চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে বলে বিজ্ঞমহল মনে করেছেন।

কৃষক মো. জয়নাল মিয়া জানান, একসময় তার প্রায় ১০ থেক ১৫টি মহিষ ছিল। এ অঞ্চলে তখন অনেকেই মহিষ পালন করত। কিন্তু এখন মহিষের চারণভূমি কমে যাওয়াতে কেউ মহিষ পালন করতে আগ্রহী না।
চাওড়ার  কৃষক  হাফেজ মিয়া  জানান, মহিষ পালন লাভজনক। মহিষ পালনের জন্য ব্যাপক খোলা জায়গা প্রয়োজন হয়।

আমতলী উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো. আবু সাইদ  জানান, জমি কমে যাওয়ায় ক্রমেই মহিশ পালন হ্রাস পাচ্ছে। এছাড়া নিম্নভূমি, চরাঞ্চল এবং কাঁচা ঘাসের অভাবে কৃষকরা মহিষ পালনে আগ্রহ হারাচ্ছে।  

 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন