স্বাধীনতার অর্ধশত বছরেও মেলেনি স্বীকৃতি!


দেশ স্বাধীনের অর্ধশত বছর পার হলেও মন্ত্রণালয়ের গেজেটে নাম আসেনি সাহসী যোদ্ধা জাকির হোসেনের। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেও স্বীকৃতি না পেয়ে তিনি বঞ্চিত হয়েছেন সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে। তারপরেও জীবনের শেষ সময়ে এসে একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে তালিকায় নিজের নাম দেখে মৃত্যুবরণ করতে চান।
১৯৫১ সালে জন্মগ্রহণ করা জাকির হোসেনের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের গেরামর্দন গ্রামে। তার পিতার নাম আজাহার আকন। ১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় তখন তার বয়স ২০ বছর। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশকে শত্রুমুক্ত করতে অন্যদের সঙ্গে তিনিও ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের তকিপুর ক্যাম্প থেকে ২০ দিনের অস্ত্র প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে ৯ নং সেক্টরে পটুয়াখালী সাব ডিভিশনে পাক-হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেন। এরপর নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হলো। কেটে গেলো ৫০ বছর। জীবন যুদ্ধে হার না মানা বীর যোদ্ধা জাকির হোসেনের নাম তবুও গেজেটভুক্ত হয়নি। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদন করলেও অজানা কারণে সুফল পাননি তিনি। বয়সের ভারে এখন তিনি নুব্জ্য। শারীরিক নানা জটিলতায় শরীরে বাসা বেঁধেছে অসুখ। স্ট্রোক করে হারিয়ে ফেলেছেন কথা বলার শক্তিও। জীবনের অন্তিম সময়ে এসেও বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাবেন বলে আশা রাখেন তিনি।
জাকির হোসেনের মেয়ে লিপি আক্তার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বাবা ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার কাগজপত্র নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও কোন কাজ হয়নি। লিপি আরো বলেন, সরকার মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের জন্য অনেক সহযোগিতা করছে। আমার বাবা এখন অসুস্থ, স্ট্রোক করে কথা বলার শক্তিও হারিয়ে ফেলেছেন। সরকারের কাছে দাবী বাবার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়টি যেন দিতে পারি। গেজেটে যেন তার নামটি প্রকাশ করা হয়। এটাই আমাদের একমাত্র চাওয়া। বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কাছে তথ্য আসলে সংশ্লিষ্টদের মনোযোগ আকর্ষণ করার প্রক্রিয়া চালাবো।
এইচকেআর
