প্রভাবশালীদের দৌরাত্ম্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকিতে গ্রাম


বেতাগীতে প্রশাসনের অবহেলায় বালু উত্তোলনকারীরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদী ও খালের গভীর থেকে প্রতিদিন অসংখ্য ট্রাকে ট্রাকে বালু তোলা হচ্ছে। বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেও প্রতিকারে কোনো ফল পাচ্ছেন না। এতে ওই এলাকায় গ্রাম রক্ষা বাঁধ, গ্রামের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ হোসনাবাদ গ্রামের নয়া খালে গত এক সপ্তাহ ধরে আত্মঘাতী ড্রেজার মেশিন বসিয়ে কেটে কেটে মাটি ও বালু উত্তোলন করছে। নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, বালু ব্যবসায়ীরা উপজেলার প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বাঁধা দেয়ার সাহস করে না। এরা ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ট্রাক ভর্তি খালের মাটি ও বালু উত্তোলন করছে। এতে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাঘাট দেবে যাচ্ছে। ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে। গ্রামরক্ষা বাঁধসহ শত শত বিঘা আবাদি জমি ভাঙনের মুখে পড়েছে।
জানা গেছে, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে গ্রামের একাধিক ব্যক্তি প্রশাসনকে জানালেও কোনো লাভ হয়নি। ভুক্তভোগীরা জানান, এভাবে ড্রেজিং করে বালু উত্তোলন করা হলে ভরা বর্ষায় তাদের বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হবে। বালু ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন এভাবে শস্যের ক্ষতি করে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। এলাকার ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পড়ছে।
বালু ব্যবসায়ী পক্ষের সুজনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ড্রেজারের মালিক বেতাগী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম লিটন আপনারা তার সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা বলেন। আমরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই বালু উত্তোলন করছি। এ বিষয় যুবলীগের সভাপতি ও ড্রেজারের মালিক মো. জহিরুল ইসলাম লিটন বলেন, ওটাকে আত্মঘাতী ড্রেজার বলে না। মাঝে মাঝে এদিক ওদিক কিছু খালের বালি মাটি উত্তোলন করা হয়। এতে খালের কোনো সমস্যা হয় না। সাংবাদিকরা একটু খেয়াল রাখলেই তো হয়।
হোসনাবাদ ইউনিয়ন সহকারী ভুমি কর্মকর্তা প্রভাষ চন্দ্র হাওলাদার বলেন, এ ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না। বালু উত্তোলন করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, কয়েকজনের অভিযোগ পেয়েছি, তাদেরকে বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে খুব শিকগিরই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
এইচকেআর
