ইভ্যালির ৪টি গাড়ি ‘চুরি’ হয়েছে: বিচারপতি শামসুদ্দিন


হাইকোর্টের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সাতটি গাড়ি খোলা নিলামে বিক্রি করেছে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালনা পর্ষদ। আদালতের এক নির্দেশনা অনুযায়ী, হাইকোর্টের একজন উপরেজিস্ট্রার ও একজন সহকারী রেজিস্ট্রারের তত্ত্বাবধানে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় রাজধানীর ধানমণ্ডি ১৪ নম্বর সড়কের ৩ নম্বর বাড়ির ভিক্টোরিয়া কনভেনশন সেন্টারে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৩০ জন নিলাম কার্ড সংগ্রহ করেন।
নিলামে মোট সাতটি চালু গাড়ি তোলা হয়। সাতটি গাড়ির মধ্যে সবচেয়ে দামি গাড়িটি হচ্ছে রেঞ্জ রোভার। প্রথমে বিলাসবহুল রেঞ্জ রোভার ব্র্যান্ডের (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৮-৭০৯৮) গাড়িটি নিলামে তোলা হয়। গাড়িটির ন্যূনতম ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা নিলামের মূল্য ধরা হয়। এই গাড়িটি সর্বোচ্চ দাম ১ কোটি ৮১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে নেন হাবিবুর রহমান নামের এক প্রকৌশলী।
নিলামের মাধ্যমে সাতটি গাড়ি মোট ২ কোটি ৯০ লাখ ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।নিয়ম অনুযায়ী, নিলাম চলাকালেই দরের ২০ শতাংশ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। বাকি টাকা সর্বোচ্চ সাত দিনের মধ্যে পরিশোধ করে গাড়ি বুঝে নিতে পারবেন ক্রেতারা। গাড়ির মূল্যের সঙ্গে সাড়ে ১৭ শতাংশ ভ্যাট ট্যাক্স দিতে হবে ক্রেতাদের।
নিলাম শেষে ইভ্যালির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, আমরা নিলামের মাধ্যমে ইভ্যালির কর্মকর্তারা যেসব গাড়ি ব্যবহার করতেন- তা বিক্রি করেছি।
তিনি জানান, আমরা যেসব গাড়ি নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করেছি সেগুলোর রেজিস্ট্রেশন, টেক্স টোকেট এবং রোড পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আমরা নিলামের আগে এসব বিষয় জানিয়ে দিয়েছি এবং যারা নিলামের মাধ্যমে গাড়িগুলো কিনেছেন, তারা এসব জেনেশুনেই কিনেছেন। তাদের নতুন করে গাড়িগুলোর রেজিস্ট্রেশন, টেক্স টোকেন এবং রোড পারমিট করে নিতে হবে।
এ সময় বিচারপতি শামসুদ্দিন আরও বলেন, আমরা আরও চারটি গাড়ির সন্ধান পেয়েছি। যা ইভ্যালি থেকে এক রকম চুরি করা হয়েছে। আগামী রোববারের মধ্যে যদি ইভ্যালির ওই গাড়িগুলো আমাদের কাছে হস্তান্তর করা না হয়, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। গাড়ি জব্দের সঙ্গে সঙ্গে আমরা তাদের বিরুদ্ধে গাড়ি চুরির মামলা দিব। এছাড়াও ইভ্যালির কাছে যেসব গ্রাহকরা টাকা পাওনা রয়েছে, আমরা খুব শিগগিরই অডিটের মাধ্যমে একটা ডাটা তৈরি করে হিসাব করে তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিব।
প্রসঙ্গত, ইভ্যালিতে পণ্যের ক্রয়াদেশ দিয়ে অর্থ পরিশোধের পর পণ্য ও অর্থ ফেরত না পেয়ে মো. ফরহাদ হোসেন নামের এক গ্রাহক গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে হাইকোর্টে একটি আবেদন করেন।
শুনানি নিয়ে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর একই বেঞ্চ ইভ্যালির সম্পদ বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেন। ১৮ অক্টোবর ইভ্যালি পরিচালনার জন্য আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে পাঁচ সদস্যের ওই কমিটি গঠন করে দেন হাইকোর্ট।
প্রতারণার অভিযোগে ইভ্যালির এমডি মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন।
এইচকেআর
