শক্তিবর্ধক হালুয়া খাইয়ে সর্বস্ব লুট


হকারের বেশে বাসে ওঠে তারা। বিনামূল্যে খাওয়ানো হয় বাত-ব্যথার ওষুধ কিংবা শক্তিবর্ধক হালুয়া। কখনো আবার সহযাত্রীর সঙ্গে ভাব জমিয়ে সুযোগ বুঝে চেতনানাশক ওষুধ ও নেশাজাতীয় হালুয়া খাইয়ে মালামাল ও নগদ টাকা লুট করে। অজ্ঞান ও মলম পার্টির চার সদস্যকে গ্রেফতারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। পুলিশ বলছে, সংঘবদ্ধ এ চক্রগুলো সারা বছর সক্রিয় থাকলেও ঈদ এলেই উৎপাত বাড়ে তাদের।
ওষুধের দোকানে আসা ইমরানের ওপর নজর গোয়েন্দাদের। ওষুধ কিনে বের হয়ে তিনি প্রবেশ করেন রাজধানীর দক্ষিণখানের একটি বাড়িতে। অতি উচ্চমাত্রার ঘুমের ওষুধসহ তাকে হাতে নাতে গ্রেফতার করা হয়। রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় অজ্ঞান পার্টির অন্যতম গুরু ইমরান হাজি সম্পর্কে পুলিশের কাছে আগে থেকেই তথ্য ছিল।
উচ্চমাত্রার ঘুমের ওষুধ, মধু ও অন্যান্য নেশাজাতীয় দ্রব্যের মিশেলে মিনিটি দুয়েকের মধ্যে ইমারন তৈরি করে ফেলেন বিশেষ হালুয়া। পরে তা প্যাকেটজাত করে আয়ুর্বেদিক শক্তিবর্ধক হিসেবে বিক্রি করা হয়। কখনো জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তৈরি করেন বিশেষ চেতনানাশক। রমজান মাসে রোজাদার ব্যক্তিরাই মূল টার্গেট ইমরানের।
অভিযুক্ত ইমরান বলেন, দেখে যদি মনে হয় তার কাছে টাকা-পয়সা আছে। তাকে টার্গেট করে তার পাশে বসে পড়েন। পরে তাকে চেতনানাশক মেশানো জুসটা খাওয়াই আর ভালোটা আমি খাই।
ইফতারের ঠিক আগে তিন থেকে চার সদস্যের একটি দল উঠে পড়ে বাসে। চক্রের মূল হোতা ইমরান হকার পরিচয়ে বিভিন্ন রোগের ওষুধের প্রচার করতে থাকেন। কোম্পানির প্রচারের স্বার্থে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয় ওষুধ। খাওয়ার পর নিশ্চিত অজ্ঞান। চক্রের বাকি সদস্যরা ভাব জমাতে থাকেন সহযাত্রীদের সঙ্গে। ইফতারের সময় অফার করা হয় ঘুমের ওষুধ মেশানো জুস। বেহুশ হওয়ার পর ছিনিয়ে নেওয়া হয় সব।
ইমরানের দেওয়া তথ্যে একটি বাসে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় আরও তিনজনকে।
পুলিশ বলছে, উচ্চমাত্রার এসব চেতনানাশক খাওয়ার পর অনেকের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ধর্মীয় উৎসবে বাসে বিপুল পরিমাণ মানুষের যাতায়াত হয়। এ সময়ে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা বিশেষ হালুয়া ও জুস খাইয়ে তাদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়।
বাসে হকারের কাছ থেকে বিশেষ হালুয়া কিংবা অপরিচিত ব্যক্তির দেওয়া খাবার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ পুলিশের।
টিএইচএ/
