কাঁচা আমের জিলাপি থাকছে, তবে...


রাজশাহীর আলোচিত কাঁচা আমের জিলাপি থাকছেই। তবে আগেরমতো আর থাকছে না আকর্ষনীয় সবুজ রং। রোববার (১৭ এপ্রিল) রাজশাহীর মিষ্টি প্রস্তুতকারী রসগোল্লার এই উদ্যোগ চালিয়ে যাবার অনুমতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
দুপুরের দিকে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী আরাফাত রুবেল জেলা প্রশাসকের সাথে বিষয়টি নিয়ে সাক্ষত করেন। ওই সময় কাঁচা আমের জিলাপি প্রস্তুত ও বিক্রি চালিয়ে যাবার অনুমতি দেন জেলা প্রশাসক।
পরে গণমাধ্যমকে জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, শুধু কাঁচা আম-ই নয়, তারা চাইলে কোনো উপাদানের জিলাপি বানাতে পারবে। তবে তা হতে হবে স্বাস্থ্য সম্মত। এ ছাড়া জিলাপিতে কোনোভাবেই ফুড গ্রেড রং ব্যবহার করা যাবে না।
রসগোল্লার উদ্যোক্তা আরাফাত রুবেল বলেন, গত শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) এক ঘণ্টার ব্যবধানে রসগোল্লার নগরীর উপশহর নিউ মার্কেট এলাকার বিক্রয়কেন্দ্রে অভিযান চালান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুই অভিযানে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় তাদের। এ নিয়ে ভোক্তাদের মধ্যে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়।
বির্তক এড়াতে তিনি কাঁচা আমের জিলাপি তৈরি ও বিক্রি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। তবে ক্রেতারা কাঁচা আমের জিলাপি চাইছিলেন। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে তিনি রোববার জেলা প্রশাসকের দপ্তরে যান। সাক্ষাতকালে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, জিলাপির সবুজ রঙ নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। এই রং ব্যবহারে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে কাঁচা আমের জিলাপি তৈরিতে বাধা নেই বলেও জানিয়েছেন।
গত ৮ এপ্রিল থেকে নগরীর দুটি বিক্রয় কেন্দ্রে নিজেদের তৈরি কাঁচা আমের জিলাপি বিক্রি করছিল রসগোল্লা। তাতে আকৃষ্ট হন রাজশাহীর ক্রেতারা। প্রথম দিনই ঢাকা পোস্টে এ নিয়ে সংবাদ প্রচার হলে দেশজুড়ে কাঁচা আমের জিলাপি ভাইরাল হয়ে যায়।
নতুন স্বাদের এই জিলাপির রং নিয়ে উত্তাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এরই প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে নগরীর উপশহর নিউ মার্কেটের রসগোল্লার বিক্রয় কেন্দ্রে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
বিজ্ঞাপনে মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়। প্রতিশ্রুত পণ্য যথাযথভাবে বিক্রি বা সরবরাহ না করার অপরাধে জরিমানা হয় ২৫ হাজার টাকা।
জিলাপিতে খুবই সামান্য পরিমাণে অপরিপক্ক গুটি আম ব্যবহারে সেটি আমের জিলাপি বলে বিক্রির দায়ে এই অর্থদণ্ড। জিলাপিতে ব্যবহার হওয়া ফুড গ্রেড রং নিয়ে কোনো আপত্তি ছিল না ভোক্তা অধিকারের।
এর প্রায় ঘণ্টাখানেকের মাথায় রসগোল্লার একই বিক্রয় কেন্দ্রে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন ‘জ্ঞাতসারে ভেজাল মিশ্রিত পণ্য বা ঔষধ বিক্রয়’ এর দায়ে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা হয়। এই জরিমানা জিলাপিতে ফুড গ্রেড রং ব্যবহারে। জিলাপিতে আমের পরিমাণ নিয়ে আপত্তি তোলেনি ভ্রাম্যমাণ আদালত।
দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভিন্ন পর্যবেক্ষণে দ্বিধায় পড়ে যান উদ্যোক্তা আরাফাত রুবেল। শেষে তিনি কাঁচা আমের জিলাপি তৈরির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন।
এসএম
