ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

Motobad news

মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে পার হয় চৌমাথা, ফুটওভার ব্রিজের দাবী নগরবাসীর

মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে পার হয় চৌমাথা, ফুটওভার ব্রিজের দাবী নগরবাসীর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরিশাল নগরীর জনগুরুত্বপূর্ণ চৌমাথা সড়ক এলাকায় ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন। নগরীর মধ্যের এই মহাসড়কটি পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন মানুষ। অনেকেই প্রাণ হারাচ্ছেন। 

নগরবাসীর দাবী ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ হলে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। এই দাবীতে সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচী পালন করেও ওভার ব্রিজ নির্মাণের কোন উদ্যোগ না নেয়ায় হতাশ নাগরিকরা। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, চৌমাথা এলাকায় কিছু সময় পর পর হাত উঁচিয়ে গাড়ি থামিয়ে পথচারীরা রাস্তা পার হচ্ছেন। গাড়ি না থামলে কেউ কেউ দৌড়ে রাস্তা পার হচ্ছেন। 

রাস্তা পার হওয়া পথচারী রিয়াজুল হাসান বলেন, চৌমাথা সড়কটি একটি ব্যস্ততম সড়ক। ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হয়। ব্রিজ থাকলে মানুষ দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতো। 

পথচারী রাশেদুল ইসলাম বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি আসা-যাওয়া করে। এখানে ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন অনেক মানুষ রাস্তা পার হচ্ছে। তাই ফুটওভার ব্রিজের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। 

চৌমাথা এলাকাটি নবগ্রাম, বটতলা, মুসলিম গোরস্তান রোডের সাথে সড়কটি মিলিত হয়েছে। এই সকল সড়ক থেকে শতাধিক এলাকার লোকজন যাতায়াত করে। ফলে অনেকেই এ মহাসড়কটি পার হতে গিয়ে বিভিন্ন সময় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। 

এছাড়াও আশপাশে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, প্রাইমারী স্কুলসহ অর্ধশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও রয়েছে। আশপাশে বাজার ও মার্কেট রয়েছে। ফলে এ এলাকাটি সবসময় ব্যস্ত থাকে। 

স্থানীয় দোকানদার রহিম, নজরুল, নরুল ইসলাম  জানান, এ স্থানে মহাসড়কটি পার হতে গিয়ে পূর্বে বহু পথচারী হতাহত হয়েছেন। এদিকে  চৌমাথা এলাকায় ফুটওভারব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন সময় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়। 

সরকারী সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের শিক্ষার্থী আলামিন বলেন, কলেজে যাবার জন্য  জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পার হতে হয়। জরুরী ভিত্তিতে এ স্থানে একটি ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করার দাবি জানাচ্ছি। 

ছাত্র সাইফুল ইসলাম বলেন, এ স্থানটি পার হওয়ার সময় জীবনটি হাতে নিয়ে পার হতে হয়। অথচ কর্তৃপক্ষ অদ্যাবধি এখানে একটি ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করেনি। 

চৌমাথা মোড়ে কথা হয় শাম্মী আক্তার নামের একজন নার্সের সঙ্গে। তিনি সদর রোডের একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করেন। চৌমাথা মোড় দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয় তাকে। 

তিনি বলেন, এই মোড়ে গাড়ির চাপও অনেক বেশি, রাস্তা পারাপার হতে অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করতে হয়। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হতে হচ্ছে আমাদের। একটি ফুটওভার ব্রীজ থাকলে আমাদের চলাচলের জন্য সুবিধা হতো, আর শঙ্কামুক্তভাবে রাস্তা পারাপার হতে পারতাম। 

পথচারী, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা সার্জেন্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে জেব্রা ক্রসিং ছিল প্রায় মোড়েই, কিন্তু সেগুলো উঠে যাওয়ায় পথচারীদের পারাপারে খুবই সমস্যা হচ্ছে। গাড়ির কিছু চালক সড়ক পার হতে মানুষকে সুযোগ দিলেও অনেকক্ষেত্রে গাড়ির গতি রোধ করা সম্ভব হয়না। পথচারীদের জন্যও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়।


সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) বরিশাল জেলার সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদা জানান, নগরীতে প্রয়োজনের তুলনায় কয়েক গুণ যানবাহন চলাচল করায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে চলাচলে। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ হলে পথচারীদের দুর্ভোগ অনেককাংশ কমে আসবে।  

বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন বলেন, নগরীর গুরুত্বপূর্ন দুটি স্থানে খুব শিগগীরই ফুটওভার ব্রিজের কাজ শুরু করার সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে চৌমাথা এলাকায় ফুটওভার ব্রিজ করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই। ]

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক (এডিসি) শেখ মোহাম্মদ সেলিম জানান, দ্রুত গতিতে গাড়ি চলাচল করা সত্যেও  ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের চৌমাথা মোড় দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে মানুষ রাস্তা পার হয়। এই এলাকায় যেমনি ফুটওভার ব্রিজ দরকার তেমনি রুপাতলী ও নথুল্লাবাদ বাসটার্মিনাল এলাকায় ফুটওভারব্রিজ অতিজরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক হোসেন বলেন, পথচারীদের দুর্ভোগ লাঘবে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ দুটি স্থানে ফুটওভারব্রিজ নির্মাণের বাজেটে সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চৌমাথা এলাকায় ফুটওভার ব্রিজ দরকার হলে পরিকল্পনা নেয়া হবে।


এসএমএইচ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন