ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

Motobad news

মঠবাড়িয়ায় কমলা ও মালটা চাষে স্বাবলম্বী হচ্ছে যুবকরা

মঠবাড়িয়ায় কমলা ও মালটা চাষে স্বাবলম্বী হচ্ছে যুবকরা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার পতিত জমিতে কমলা ও মালটা চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে যুবকরা। এসব চাষীরা স্থানীয় ভাবে এসব ফল বিক্রির পাশাপাশি পাইকারী বাজোরেও বিক্রি শুরু করেছেন। তাঁদের অনুসরণ করে অধিকাংশ পরিবার নিজেদের বাড়ির আঙ্গিনা, বাড়ির ছাদ ও পতিত জমিতে টুকিটাকি কমলা ও মালটা চাষ করতে শুরু করেছেন।

গত দুদিন ধরে উপজেলার  বড় মাছুয়া বাজারের দক্ষিণ পাশে সগীর মীর, মঠবাড়িয়া সদর ইউনিয়রে আন্ধারমানিক গ্রামে সেলিম মিয়া, ধানীসাফা বাজার সংলগ্ন আব্দুল মালেক মিয়ার বাগানে গিয়ে দেখা যায় প্রচুর কমলা ও মালটা গাছ। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরা এসব ফল চাষে ব্যপক সফলতা পেয়েছেন। তাঁদের দেখা-দেখি অনেকেই কমলা ও মালটা চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

এদিকে বেতমোর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম পশ্চিম মিঠাখালীর কৃষক ফিরোজ মাতুব্বর এর বাগানে গিয়ে দেখা গেছে মাদ্রাজি কমলা আবাদ। ৩৩ শতাংশ পতিত জমি জুড়ে সারি সারি কমলার গাছে হলুদাভ রঙের বর্ণিল কমলা পাকতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে কৃষক ৩০ হাজার টাকার কমলা বিক্রি করেছেন। এ উপজেলায় তিনিই একমাত্র কমলা চাষি যিনি প্রথম মাদ্রাজি কমলা আবাদে করে সফলতার মুখ দেখেছেন।

ফিরোজ মাতুব্বর বলেন, তাঁর বাবা মতিলাল মাতুব্বর একজন প্রান্তিক চাষি। তিনি শিশুকাল থেকেই বাবার সাথে কৃষিশ্রমে সহায়তা করতে শুরু করেন। ২০০৫ সালে পৈত্রিক জমি আর হালের বলদ বিক্রি করে সৌদি আরবে যান ফিরোজ। সেখানে একটি সিমেন্ট কারখানায় কয়েকবছর কাজ করেন। সৌদি আরবে থাকাার সময় কুষ্টিয়ার জীননগরের একজনের সাথে তার পরিচয় ঘটে। তাঁর কাছ থেকে মাদ্রাজি কমলার চাষের বিষয়ে প্রথম জানতে পারেন ফিরোজ। পরে তিনি কুষ্টিয়ার জীবননগরের ওমর ফারুক খানের নার্সারী থেকে ১০ হাজার টাকায় শতাধিক মাদ্রাজি কমলার চারা সংগ্রহ করেন। দুই বছর আগে নিজের বসতবাড়ি সংলগ্ন পতিত ৩৩ শতাংশ জমিতে বেড় কেটে কান্দি প্রস্তুত করেন। এরপর সারি করে কমলার চারা রোপন করেন। চারা রোপনের দেড় মাসের মাথায় চারায় মুকুল আসে। ওই বছর বাগান থেকে মাত্র ৩০ হাজার টাকা আয় হয় তাঁর। চলতি বছর তাঁর বাগানে তিন লক্ষাধিক টাকার কমলা উৎপাদন হয়েছে। পাইকারি ১২০ টাকা কেজি দরে বাগানে এসে ব্যবসায়িরা কিনে নিচ্ছেন। পরিপক্ক এসব কমলা পাকতে শুরু করেছে। আগামী ২০ দিনের মধ্যে পুরো কমলা পাকবে। আরও তিন লাখ টাকার লাভের আশা করছেন এ কৃষক। সেই সাথে তাঁর কমলার নার্সারিতে জোড়কলম বা সায়ন পদ্ধতিতে এক হাজার চারা উৎপাদনও করেছেন। এসব চারা আগামী মাসেই তিনি এলাকার অন্য কৃষকদের কাছে বিক্রি করে মাদ্রাজি কমলার আবাদ সম্প্রারণ ঘটানোর স্বপ্ন দেখছেন।

মঠবাড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, পিরোজপুর অঞ্চল মাল্টা চাষে সমৃদ্ধ অঞ্চল। তবে কমলা চাষেরও ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় পশ্চিম মিঠাখালী গ্রামের প্রান্তিক কৃষক ফিরো মাতুব্বর তাঁর দৃষ্টান্ত। সে পতিত জমিতে কমলার আবাদ করে মাত্র দুই বছরেই সফলতা পেয়েছেন। যা যেকোন কৃষকের জন্য দৃষ্টান্ত ।

 
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন