ঢাকা বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫

Motobad news

ভাণ্ডারিয়া ছয় গ্রামের মানুষের গলার কাঁটা ১২ স্লুইসগেট

ভাণ্ডারিয়া ছয় গ্রামের মানুষের গলার কাঁটা ১২ স্লুইসগেট
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্মিত ১২টি স্লুইসগেট এ অঞ্চলের মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে। স্লুইসগেটগুলো যথাযথ কাজ না করায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও শুস্ক মৌসুমে পানি সংকটে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।

প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত গেট, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে উপকারের পরিবর্তে এখন ছয় গ্রামের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। চাষাবাদের স্বার্থে দ্রুত স্লুইসগেটগুলো যথাযথ সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকসহ এলাকার মানুষ।

ভাণ্ডারিয়া পৌর শহরের ভুবনেশ্বর খালে নির্মিত স্লুইসগেটের কাছে গিয়ে দেখা যায়, দুটি কপাটের একটি কপাট নষ্ট হয়ে গেছে। স্থানীয়রা সেটি স্লুইসগেটের পিলারের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে রেখেছে। ফলে এটি কোনো কাজে আসছে না। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভুবনেশ্বর খালের স্লুইসগেট থেকে পানি খালে প্রবেশ করতে না পারায় দক্ষিণ ভাণ্ডারিয়া, উত্তর ভাণ্ডারিয়া, মধ্য ভাণ্ডারিয়া, পৈকখালী, উত্তর পৈকখালী ও জামিরতলার ৬ গ্রামের মানুষ শীতের সময়সহ শুকনো মৌসুমে গোসল করা, রান্নার পানি, ক্ষেত-খামারে পানি সরবরাহে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।

উপজেলার চারদিক দিয়ে বেষ্টিত ৩৯/২ সি পোল্ডারের বেড়িবাঁধে ছোট-বড় মিলিয়ে ১২টি স্লুইসগেট রয়েছে। চাষাবাদের স্বার্থে ২০১৫ সালে নির্মিত ভুবনেশ্বর খাল, পানা ও কঁচা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খালগুলোকে বাঁধ দিয়ে স্লুইসগেটের মাধ্যমে পানি নিয়ন্ত্রণ শুরু হয়। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত দরজা থাকায় পানিপ্রবাহের গতি কমে যায়। যার ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য খাল এরই মধ্যে ভরাট হয়ে যাওয়ায় প্রভাবশালীরা তাতে ঘরবাড়ি নির্মাণসহ মাছ চাষের নামে দখল করে নিয়েছে। দু-একটি জলকপাট থেকে সামান্য পানি প্রবেশ করলেও তা খালের মাথা পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না। আবার জলকপাট অচল থাকায় গেটগুলো কৃষকের কোনো উপকারে আসছে না। পাউবোর নজরদারির অভাবে স্লুইসগেটগুলো এক প্রকার বন্ধপ্রায়।

এ বিষয়ে উপজেলার উত্তর পৈকখালীর কৃষক আ. বারেক হাওলাদার, শাহীন হাওলাদার, খালেক হাওলাদার, আজিম তহশিলদারসহ আরও অনেকে বলেন, চলতি আমন মৌসুমে প্রথম পর্যায়ের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় পর্যায় বীজতলার জন্য ধান ফেললেও বৃদ্ধি না হওয়ার কারণে ফলন ভালো হয়নি। বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি, শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকট দেখা দেওয়ার কারণে সঠিকভাবে চাষাবাদ করে রবিশস্য উৎপাদন করতে পারছেন না বলে তাঁদের অভিযোগ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ উপজেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১০,২০০ হেক্টর এর অনুকূলে ১০৩১ হেক্টর জমিতে বীজতলা করা হয়। কিছু কিছু বীজতলা স্লুইসগেটের অব্যবস্থাপনার কারণে পানির অভাবে সমস্যা হয়েছে। বর্তমান শুকনো মৌসুম শুরু হওয়ায় উপজেলার বেশিরভাগ মাঠে পানি কম থাকায় রবিশস্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে পাউবো জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবে মওলা মো. মেহেদি হাসান বলেন, বিষয়টি জেনেছেন। সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন