জাতীয় পার্টির নেতাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক মেম্বারের জামিন নামঞ্জুর


পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় জাতীয় পার্টির নেতা শফিকুল ইসলামকে কুপিয়ে পা বিচ্ছিন্ন করে হত্যাচেষ্টার মামলায় জেলহাজতে থাকা তুষখালীর সাবেক ইউপি সদস্য সগীর হাওলাদারের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
একই সঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মঠবাড়িয়া থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদের আবেদন করা রিমান্ড নামঞ্জুর করেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) জেলহাজতে থাকা সগীর হাওলাদারের পক্ষে তার আইনজীবী জামিনের প্রার্থনা করেন। অপরদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পূর্বের আবেদন করা রিমান্ড শুনানির জন্য তাকে আদালতে হাজির করেন।
মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল আজাদ শুনানি শেষে রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
উপজেলার তুষখালী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামকে কুপিয়ে পা বিচ্ছিন্ন করে হত্যাচেষ্টার মামলায় এজাহারভুক্ত ২নং আসামি একই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য সগীর হাওলাদার। উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হলে সগীর গত ৪ ডিসেম্বর নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিনের প্রার্থনা করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মঠবাড়িয়া থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ মামলায় উপজেলার মধ্য তুষখালী গ্রামের মৃত রুস্তুম আলীর ছেলে হাফিজ (২৮), একই গ্রামের হাফেজ খানের ছেলে মূল হামলাকারী ইয়াসিন (৪০) ও মূল পরিকল্পনাকারী তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদারের ভাই তুষখালী বাজারের মুদি দোকানি নাসির হোসেনকে (৫৮) গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তারা জেলহাজতে রয়েছেন।
তিরি আরও বলেন, মূল হামলাকারী ইয়াসিনকে ঢাকার লালবাগ থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করলে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন।
মঠবাড়িয়া থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িত ও পলাতক অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় বাসিন্দা মুসা শরীফের সঙ্গে চলমান একটি মামলায় শফিকুল আদালতে হাজিরা দিতে সকালে মোটরসাইকেলযোগে তুষখালী থেকে মঠবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মাঝের পুলের সন্নিকটে ফরাজি বাড়ির সামনে কালভার্টের উপরে আসামাত্রই একটি মহেন্দ্র গাড়ি শফিকুলের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। শফিকুল মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে পিছনের দিকে দৌড় দিলে হামলাকারীরা মাহেন্দ্র থেকে নেমে তাকে ধাওয়া করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে বাম পা বিচ্ছিন্ন করে। এ সময় এলোপাতাড়ি কোপানোর কারণে শফিকুলের পেটের ভুঁড়ি বেড়িয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়।
স্থানীয়রা গুরুতর আহত শফিকুল ইসলামকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানেও তার অবস্থার অবনতি হলে শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ হামলার ঘটনায় আহত শফিকুলের মা মমতাজ বেগম বাদী হয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর ৫ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
এইচকেআর
