ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫

Motobad news

চর বিজয়কে ঘিরে চলছে ছোট মাছ মারার মহোৎসব

চর বিজয়কে ঘিরে চলছে ছোট মাছ মারার মহোৎসব
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা চর বিজয়ে জেলেরা পেতে রেখেছে সূক্ষ্ম ফাঁসের জাল। পুরো চরটি জুড়ে এসব জাল পেতে রাখা হয়েছে। এসব জালে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে ইলিশের পোনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট ছোট মাছ। 

এমন দৃশ্য দেখে পর্যটকরাও হতবাক। এ নিয়ে পরিবেশবিদরা উদ্বিগ্ন। আর মৎস্য বিভাগ বলছে, বারবার অভিযান চালিয়েও থামানো যাচ্ছে না এদের। সমুদ্রের ভারসাম্য রক্ষায় ছোট ছোট মাছ মারা বন্ধ না করলে অচিরেই দক্ষিণাঞ্চলের মৎস্য ভাণ্ডার শূন্য হয়ে পড়বে এমনটাই জানিয়েছেন চর বিজয় থেকে ফিরে আসা পর্যটকরা।

কুয়াকাটা থেকে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে গভীর সাগরে চর বিজয়ের অবস্থান। বর্ষা মৌসুমে পানিতে ডুবে থাকলেও শীত মৌসুমে বিশাল আকৃতি নিয়ে জেগে ওঠে এ চরটি। সারা বছর এর আশপাশে থাকে জেলেদের উপস্থিতি। তা‍ঁরা চর বিজয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে ছোট ফাঁসের জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে। প্রতিদিন কি পরিমাণ পোনা মাছ নিধন হচ্ছে, তা চোখে না দেখলে কল্পনা করাও কঠিন। অবাধে এসব মাছের পোনা নিধনযজ্ঞ বন্ধ না হলে সাগর-নদী থেকে মৎস্য সম্পদ হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিবে বলে মৎস্য বিশেষজ্ঞরা জানান।

এদিকে পর্যটন এলাকায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা মাছের পোনার নিধনযজ্ঞ দেখে উৎকন্ঠা প্রকাশ করে জানান, চরের বিভিন্ন স্থানে বাঁশের খুঁটি গেড়ে ভাসা ও বেড় জাল পেতে রেখেছে জেলেরা। আর জালের পাশেই পরে রয়েছে নানা প্রজাতির ছোট ছোট মাছ। এসব দেখে খুব খারাপ লাগে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তাঁরা।

আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউএসএইড,ইকোফিস-২ওয়ার্ল্ডফিস বাংলাদেশ’র সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, ওই চরে বিভিন্ন সময়ে গিয়ে দেখেছি, জেলেরা ভাটার সময়ে জাল পেতে রাখে। আর জোয়ার আসলে ওই জালে ছোট-বড় সকল সাইজের মাছ আটকে মারা পরে। তবে শীত মৌসুমে অধিকাংশ রেনু পোন চর বিজয়ের কোল ঘেঁষে আশ্রয়ের জন্য আসে। এর মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই ইলিশ। বাকি ২০ ভাগের মধ্যে রয়েছে তাইড়া, পোয়া, ফাইসা, বাটা, তুলারডাটিসহ আরো অনেক প্রজাতির মাছের পোনা। 

এছাড়াও জেলেদের জালে জড়িয়ে অতিথি পাখিও মারা যাচ্ছে। এ চরটি মৎস্য প্রজনন সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন এই গবেষক। কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাড়ি ইনচার্জ আখতার মোর্শেদ বলেন, সাগর ও নদীর মোহনায় তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, জায়গাটা একটু দূর থাকায় সার্বক্ষণিক নজরদারি করা সম্ভব হচ্ছে না। তার পরও সামুদ্রিক মৎস্য আইনে ১৫ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হয়েছে। এসময় একটি মাছ ধরা ট্রালার বাজেয়াপ্ত করা হয়। এছাড়া ৭ থেকে ৮ বার মোবাইল কোর্টে মাধ্যমে অভিযান পরিচালন করে ২০ হাজার মিটার অবৈধ জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন