খোলা গাড়িতে বালু পরিবহন, দুর্ভোগে চালক-যাত্রীরা


ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার আঞ্চলিক সড়কগুলোতে খোলা ট্রাকে করে বালু বহন করা হচ্ছে। এতে বালু-ধূলিকণা বাতাসে মিশে বায়ু দূষণ করছে। সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের যাত্রী ও পথচারীদের দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে একাধিক বার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিদিন উপজেলার ঘোলপাড়,শান্তির হাট,খেয়াঘাট,কাচারি খাল,তালুকদার হাট,হাকিমুদ্দিন বাজার,সাকেঁর ভিটা,ডাওরীর হাট ও আশপাশের এলাকা থেকে বালু ট্রাকে ভরাট করে বিভিন্ন স্থানে বহন করা হচ্ছে। এই বালু বিভিন্ন বসতবাড়ির ভিটা উঁচুকরণ ও গর্ত ভরাটসহ ইট ভাটায় নেওয়া হয়। অথচ নিয়ম অনুযায়ী ট্রাকে বালু-মাটি বহনের ক্ষেত্রে কাপড় দিয়ে ঢেকে বহন করার কথা। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তা না করে ইচ্ছেমতো বহন করছেন। ফলে চলন্ত গাড়ি থেকে বালু উড়ে পথচারীদের চোখে-মুখে লাগছে। মাঝে মাঝে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকে। গাড়ির পেছনে থাকা যানবাহন বিশেষ করে মোটরসাইকেল,রিকসা, চালকরা চোখে-মুখে বালু ঢুকে দুর্ঘটনার শিকার হন।
অটোচালক বেলাল, মোটরসাইলেক চালক জহিরুল ইসলাম টুটুল,ফিরোজ,শিশির কুমার বলেন, ‘এ সড়কে গাড়ি চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। কিছুদিন ধরে সড়কে বালুবাহী গাড়ির বেপরোয়া গতি আর বালু উড়ে চোখে-মুখে পড়ছে। এতে যাত্রী ও আমাদের অনেক সমস্যা হয়।’
সরকারি আব্দুল জব্বার কলেজের প্রভাষক এএইএম মোস্তফা কামাল, নাছির, শিক্ষার্থী ফারিহা, মুনজেরিন, কবির বলেন, বালু ভর্তি গাড়ি যখন ঝাঁকুনি খায়, তখন পিছনের যাত্রীদের গায়ে এসে বালু পরে। বাধ্য হয়ে এসব গাড়ি থেকে দুরে থাকি। তবে এ ব্যাপারে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এ সময় জানতে চাইলে ট্রাক চালক রাজিব, সবুজ বলেন, ‘আমরা তো বহুদিন ধরে এভাবে গাড়িতে করে বালু আনা–নেওয়া করি।তবে আমাদের ঢেকে নেওয়া উচিত।
বালু ব্যবসায়ী টিপু মাতাব্বর, তোফায়েল হোসেন, হাসান ফকির বলেন,বালুবাহি গাড়ী ঢেকে না নিলে পথচারিদের অনেক সমস্যা হবে।এটা উচিত নয়। আইন কানুন মেনে আমাদের ব্যবসা করা উচিত।
বোরহানউদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনির হোসেন বলেন,পথচারীদের সমস্যা হয় এমন কর্মকান্ড থেকে সবার বিরত থাকা উচিত। বিষয়টি আমরা নজরে রাখছি।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নওরীন হক বলেন, খোলা ট্রাকে বালু পরিবহন জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং পরিবেশ দূষণ করছে। বালু ব্যবসায়ীদেরকে ইতিমধ্যে সর্তক করা হয়েছে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত নির্বাচনকে ‘রাতের ভোট’ বললেন আ. লীগেরই সাবেক প্রতিমন্ত্রী
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে রাতের ভোট বললেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুর রহমান তালুকদার।
পটুয়াখালী-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মহিবুর রহমানকে জড়িয়ে এমন মন্তব্য করেন সাবেক এই সংসদ সদস্য।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) রাতে ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের এক নেতার সঙ্গে মাহবুবুর রহমান তালুকদারের কথোপোকথনের একটি অডিও কল রেকর্ড ভাইরাল হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেকেই নিশ্চিত করেছেন এই কল রেকর্ডটি তারই।
ওই কল রেকর্ডে মাহবুব তালুকদারকে বলতে শোনা যায়, বর্তমান এমপি মহিব রাতের ভোটে এমপি হইছে। তাকে শেখ হাসিনা মনোনয়ন দেয়নি।
এ সময় শ্রমিক লীগ নেতা রুমান হাসনাতকে হুমকি দিয়ে তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ করতে হলে আমার কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিতে হবে। মহিবকে নিয়ে ফেসবুকে স্টাটাস দেও, আবার আওয়ামী লীগ করতে চাও। তুই কেমনে আওয়ামী লীগ করোছ, আমি দেখে নেব। আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, আমার বাবাও সভাপতি ছিল।
এ সময় তিনি বর্তমান সংসদ সদস্য মহিবুর রহমানকে নিয়ে নানা ধরনের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ভুক্তভোগী রুমান হাসনাত বলেন, আমি বর্তমান সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান এমপির ছবি দিয়ে ফেসবুকে মানবতার ফেরিওয়ালা লিখে স্টাটাস দিয়েছিলাম। এই দেখে মাহবুবুর রহমান তালুকদার আমাকে কল দিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেন এবং বর্তমান সংসদ সদস্যকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
কল রেকর্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতালেব তালুকদার বলেন, এটা সাবেক এমপির ফোন কল, সে আগেও এরকম বলছে। কাউকে আওয়ামী লীগ করতে হলে তার কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিতে হবে এবং বিগত নির্বাচন নিয়ে বাজে মন্তব্য করার সাহস তিনি কোথা থেকে পান। আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা ও কেন্দ্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছে লিখিত দেব।
রুমানের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, কিছু করতে পারবে না। আমরা সবাই সত্যের সঙ্গে আছি। ওই ছেলে দলের জন্য কাজ করেন। সাবেক এমপি কত জনকে মারবেন? তিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগ করেন কি না, তা নিয়েও সন্দেহ হয়।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমানের মন্তব্য জানতে তাকে কল করলে তিনি রিসিভ করেনি। তবে আগে তিনি কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর কল রিসিভ করে নানা ধরনের তালবাহানা দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।
এর আগে কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল তালুকদারকে জিহ্বা কেটে ফেলার হুমকি দেন সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী। সে ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কলাপাড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা।
এইচকেআর
