বিসিসি নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে জয়ী হয়েছেন আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত
-64524fe3783e82.jpeg)

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বেসরকারি ফলাফলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। তিনি ১২৬টি কেন্দ্রে পেয়েছেন মোট ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট।
তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৮২৮ ভোট। সেই হিসেবে ৫৩ হাজার ৯৮০ ভোটের বিশাল ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত।
সোমবার রাতে বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. হুমায়ুন কবির।
এদিকে, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরে নৌকা প্রতীকের প্রধান নির্বাচন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নবনির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেছেন, ‘বরিশালবাসীর অক্লান্ত পরিশ্রমে আমি মেয়র পদে জয়লাভ করেছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী যে আশা-আকাক্সক্ষা নিয়ে আমাকে আপনাদের মাঝে পাঠিয়েছেন, ভোটের মাধ্যমে আপনারা আমাকে বিজয়ী করে নেত্রীর আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ করেছেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনের ইশতেহারে আপনাদের প্রতি দেওয়া সকল অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নে আমি সচেষ্ট থাকবো। আল্লাহ আমাদের সকলের মঙ্গল করুন।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, কেন্দ্রীয় কমিটির বরিশাল বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, সংসদ সদস্য পংকজ নাথসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে, ঘোষিত ফলাফলে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপণ। তিনি পেয়েছেন ৭ হাজার ৯৯৯ ভোট। এর পরেই অবস্থান জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপসের। তার প্রাপ্ত ভোট ৬ হাজার ৬৬৫ ভোট।
এছাড়া জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু গোলাপ ফুল প্রতীকে ২ হাজার ৫৪৬, হরিণ প্রতীক নিয়ে মো. আলী হোসেন হাওলাদার ২ হাজার ৩৮১ এবং হাতি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান পেয়েছেন ৫২৯ ভোট।
এদিকে, বিজয়ের খবর পেয়ে বিজয়ী প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের নির্বাচনী কার্যালয়ে তাঁর সমর্থকরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। নেতা-কর্মীরা ছুটে যান নগরীর কালুশাহ সড়ক এলাকায় নবনির্বাচিত মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের বাসায়। সেখানে প্রার্থীকে নিয়ে আনন্দ উল্লাস করেন কর্মীরা।
এর আগে নৌকা প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে খোকন সেরনিয়াবাতকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পংকজ নাথসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এছাড়া এলাকায় এলাকায় ভোটকেন্দ্র থেকে মিছিল খ- খ- মিছিল বের করেন নেতাকর্মীরা। তবে বিজয় মিছিলে নির্বাচন কমিশনের সাময়িক নিষেধাজ্ঞার কারণে সোমবার রাতে ফলাফল ঘোষণার পরে নগরীতে কোন বিজয় মিছিল হয়নি।
তাছাড়া খোকন সেরনিয়াবাতের বিজয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনায় গঠিত কেন্দ্রীয় টিমের প্রধান, পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির মন্ত্রী মর্যাদায় আহ্বায়ক ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ।
এছাড়া শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর ও সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. হুমায়ুন কবির বলেছেন, ‘সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে আমরা বরিশাল সিটি নির্বাচন সম্পন্ন করতে পেরেছি। নির্বাচনকে ঘিরে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বড় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যেটা ঘটেছে সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ করে তা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
এর আগে মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সোমবার সকাল আটটা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে একটানা চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত। ভোট শুরুর পর পরই সরকারি বরিশাল কলেজ কেন্দ্রের চার নম্বর কক্ষে ইভিএমে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় কিছু সময় বন্ধ ছিলো ভোটগ্রহণ।
এছাড়া ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে হরিণা ফুলিয়া এলাকাসহ আরো বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএমে ত্রুটির খবর পাওয়া গেছে। ভোটাররা বলছেন, ইভিএম সম্পর্কে ধারণা কম থাকায় ভোট দিতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।
আরজেএন
