ঈদ উপলক্ষে বরিশালের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে টিকিট বিক্রির ধুম

ঈদযাত্রা কেন্দ্র করে বরিশাল নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালেও অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেড়েছে যাত্রীর ভিড়। তাই আগে থেকেই বাস কাউন্টারগুলোতে শুরু হয়েছে অগ্রিম টিকিট বিক্রি। তবে টিকিটের জন্য এখন পর্যন্ত আগের চেয়ে খুব বেশি দাম নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বরিশালে পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি বড় বড় প্রতিষ্ঠান থাকায় যেকোনো বড় উৎসবের ছুটিতে বহু মানুষ এ শহর ছেড়ে যান। ফলে এই উৎসবের দিনগুলোতে যানবাহনের ওপর যাত্রীদের ভিড় বাড়ে। এবারের ঈদেও তার ব্যতিক্রম নয়।
শুক্রবার দুপুরে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে গিয়ে জানা গেছে, এখান থেকে এসি-নন এসি বিভিন্ন বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি গত ৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে। বরিশাল থেকে ঢাকা, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন রুটে অসংখ্য টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে বরিশাল থেকে ঢাকার জন্য বিলাসবহুল গাড়িতে বিজনেস ১২০০ টাকা ও ইকোনোমি সিটের জন্য ৮৫০ টাকা দিয়ে অগ্রিম সিট বুক করে রাখা যাচ্ছে।
কাউন্টারের কর্মীরা জানিয়েছেন, এবার ঈদে কারো কাছ থেকে টিকিটের জন্য বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। তবে এসময় বরিশাল থেকে মানুষ ঢাকায় কম যাচ্ছেন। আসছেন সবচেয়ে বেশি। এতে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। তবুও যাত্রীদের সেবায় প্রয়োজন হলে এ রুটে আরো বাস যুক্ত করার কথা জানিয়েছে গ্রিনলাইন পরিবহনের কর্মকর্তারা।
কাউন্টারে টিকিট কিনতে আসা যাত্রী সোহরাব হোসেন জানান, তিনি বরিশাল থেকে যশোরে যাবেন। যদিও বাসের অবস্থা ভালো না। তবে দাম আগের মতোই রাখা হয়েছে।
এদিকে যাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় আগে থেকেই অনেক পরিবহন মালিক তাদের পুরনো বাসে রঙ দিয়ে নতুনের মতো করে রাস্তায় নামিয়েছেন। যাতে মানুষের জীবনের ঝুঁকি অনেক বাড়বে বলে মনে করছেন সাধারণ যাত্রীরা।
রফিক নামের এক যাত্রী জানান, বরিশালে দু’একটি বিশেষ পরিবহন ছাড়া অধিকাংশ পরিবহনের গাড়ির লক্কর ঝক্কও অবস্থা। ঈদ এলেই রঙ দিয়ে নতুন বানিয়ে রাস্তায় নামায়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের বিষয়ে নির্বিকার। তাই উৎসবের দিনগুলোতে অনেক সময় এসব বাস দুঘটনার শিকার হয়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে, বিভিন্ন রুটে যাত্রী সেবা দেওয়ার জন্য ছয়টি এসি বাস যুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিআরটিসি’র পরিবহন পরিদর্শক মশিউর রহমান। তিনি জানান, গতকাল শুক্রবার থেকে এসব বাসে অগ্রিম বুকিং শুরু হয়েছে।
মশিউর রহমান আরো জানান, বাসে যাত্রীদের যেকোন হয়রানি বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
তবে বিআরটিসির বাসের মান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। বরিশাল-পাথরঘাটা রুটের যাত্রী হাসিব মিয়া বলেন, এতো অকেজো বাস ঢাকা শহরের লোকালেও চলবে না। এসব বাসের ছাদেও ছিদ্র দিয়ে বৃষ্টির সময় পানি গায়ে পড়ে। কিন্তু নতুন গাড়ি দেওয়া হয় না। এ অবস্থা বছরের পর বছর ধরে চললেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।
এদিকে বাস চালকদের রমরমা ব্যবসা থাকলেও ঈদ উপলক্ষে তেমন বাড়েনি লঞ্চের টিকিট বুকিং। লঞ্চঘাটেও সারি সারি লঞ্চ ভেড়ানো থাকলেও দেখা যায়নি যাত্রীদের তেমন ভীড়। লঞ্চে অলস সময় পার করছেন লঞ্চ শ্রমিকরা।
তারা জানান, আগে এই সময়ে লঞ্চের ডেকেও মানুষ জায়গা পেতেন না। এখন সবাই সড়কপথে সহজে যাতায়াত করতে পারায় তাদের নিরবে বসে থাকতে হচ্ছে। তবে আর কয়েকদিন পর লঞ্চেও ভিড় বাড়বে বলে আশা করছেন তারা।
এমএন